স্থানীয় সূত্রে খবর, সৌভিকের যখন মাত্র পাঁচ মাস বয়স তখন তাঁর মা দিপালী হাজরার অকাল প্রয়াণ ঘটে। তারপর থেকেই সে খামারবেড়িয়া গ্রামে মামাবাড়িতেই বড় হন। ২০১৯ সালে কলেজে পড়াকালীনই তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সম্প্রতি ছুটি কাটিয়ে তিনি ফের কাশ্মীরে (Kashmir) কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান বলে জানা গিয়েছে। আর শনিবারই তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে আসে। রবিবার মৃত সেনা জওয়ান সৌভিক হাজরার মৃতদেহ ওন্দার খামারবেড়িয়ার বাড়িতে নিয়ে আসা হবে। প্রথমে নাসিকে প্রশিক্ষণ চলে তাঁর। পরে পঞ্জাবে, অসমে কাজের দায়িত্ব পান। শেষে কাশ্মীরে নিযুক্ত হন তিনি। এই বছরই পুজোর আগে এক মাসের ছুটি নিয়ে খামারবেড়িয়া গ্রামে এসেছিলেন তিনি। পুজোর ছুটি কাটিয়ে ভাইফোঁটার দিন তুতো দিদি ও বোনেদের কাছে ভাইফোঁটা নিয়ে সেদিনই কাশ্মীরে ফিরে যান সৌভিক।
এখনও পর্যন্ত যা খবর, শুক্রবার কাশ্মীরের মাচাল সেক্টরে টহল দেওয়ার সময় আচমকাই তুষার ঝড় শুরু হয়। ঐ ঘটনায় নিমেষের মধ্যে বেশ কয়েক জন সেনা জওয়ান চাপা পড়ে যান। বাকিদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে বাঁকুড়ার সৌভিক হাজরা সহ তিন জনকে উদ্ধার করা যায়নি। পরে তাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সৌভিকের মৃত্যু হয়। ৫৬ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের ৩জন সেনা জওয়ান প্রহরায় ছিলেন সেখানে। আচমকা তুষারধসের মুখে পড়ে তাঁরা আর পালাতে পারেননি।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে দু’-এক কিলোমিটার আগে কুপওয়ারার মাছিল এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়। কাশ্মীর থেকে তাঁর কফিন বন্দী দেহ প্রথমে আসবে দমদম বিমানবন্দরে। সেখান থেকে যাবে ওন্দার খামারবেড়িয়া গ্রামে। গ্রামের মানুষ এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন সৌভিককে শেষবার দেখার জন্য।