এই সময়: ফের সরকার ফেলার হুমকি বিরোধী দলনেতার মুখে। সোমবার ধর্মতলায় এক দলীয় সভা থেকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মানুষ দেখতে পাচ্ছে, যেতেই হবে। দেখতে থাকুন, মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ড, ঝাড়খণ্ডের পর পশ্চিমবঙ্গ।’ শুভেন্দুর এই বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আবার শোরগোল পড়েছে। একে একপ্রকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফেলার হুমকি হিসেবেই দেখছে রাজ্যের শাসকদল। তা নিয়ে বিজেপির সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তৃণমূল নেতারা।

CV Ananda Bose : মমতায় শ্রদ্ধা আনন্দ বোসের, মানতে চান রাজ্যের পরামর্শ
কয়েক মাস আগে মহারাষ্ট্রে শিবসেনায় ভাঙন ধরার পর উদ্ধব ঠাকরে সরকারের পতন হয়। নির্বাচিত সরকার ফেলার জন্য সে সময় বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছিল বিরোধীরা। একই কায়দায় ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বিজেপি লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে বিরোধীরা প্রায়ই অভিযোগ করে থাকে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অবশ্য প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তা সত্ত্বেও শুভেন্দু-সহ বঙ্গ বিজেপির নেতারা যে ভাবে দিনের পর দিন বাংলায় নির্বাচিত সরকার ফেলার হুমকি দিয়ে চলেছেন, তাতে জনমানসে এই ধারণাই তৈরি হচ্ছে যে, মহারাষ্ট্রের মতো বাংলা ও ঝাড়খণ্ডেও ‘অপারেশন লোটাস’ কর্মসূচিকে খির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রতি বিজেপি কতটা আস্থাশীল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Abhishek Banerjee: ‘মুখ্যমন্ত্রীর মতো ওদের সর্বোচ্চ নেতা শুভেন্দুর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে পারবেন?’ প্রশ্ন অভিষেকের
ঘটনা হলো, এর আগেও একাধিক বার সরকার ফেলার হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ঝাঁপ গুটিয়ে যাবে তৃণমূলের- এ কথা বলে প্রথম বোমা ফাটিয়েছিলেন শুভেন্দুই। পরে সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষের মতো বঙ্গ-বিজেপির প্রথম সারির নেতারাও শুভেন্দুর সুরে গলা মেলান। দিন কয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের এক জনসভা থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, ‘ডিসেম্বরে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়বে। তখন দেখবেন তৃণমূল কাঁপছে।’ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘এই সরকার পদ্মপাতায় জলের মতো। এই আছে, এই নেই।’ প্রত্যেকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একটা জিনিসই বোঝাতে চেয়েছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আয়ু আর বেশি দিন নয়।

Mamata Banerjee: ‘… বিজেপির বেলা কিছু হয় না ‘, অর্পিতার গ্রেফতারির প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণ মমতার
বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘ভোটে হেরে গিয়ে বিজেপি ব্যাকডোর পলিটিক্স করছে।’ তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, ‘উনি ভুলে গিয়েছেন এটা পশ্চিমবঙ্গ। এটা গোয়া, মহারাষ্ট্র নয়। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় রয়েছেন। ইডি-সিবিআই দিয়ে এখানে মেরুদণ্ড ভাঙা যায় না। পয়সার লোভ দেখিয়ে এখানে বিধায়ক-সাংসদদের কেনা যায় না।’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘বাংলায় সরকার পড়বে না। কারণ, দিদি ও মোদীর সমঝোতা ভাঙার ক্ষমতা এই রাজ্যের বিজেপি নেতাদের নেই।’ সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, ‘বিজেপি’র মানুষের উপর ভরসা নেই। তাই জনপ্রতিনিধি কেনাবেচা করে। আমরা বলি, মানুষকে সঙ্গে নিয়েই তৃণমূলকে হটাতে। জনপ্রতিনিধি কেনাবেচা গণতন্ত্র হত্যার সামিল।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘এখন যিনি বিরোধী দলনেতা, তিনি তো তখন মন্ত্রী ছিলেন। তখন তিনি চুপ করে বসেছিলেন কেন?’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version