গোরু পাচার মামলায় বেশ কয়েকদিন আগেই বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য জাল গোটাচ্ছে আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিও। অনুব্রত এই মুহূর্তে আসানসোল কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। যে কেষ্টর দাপটে বীরভূমে বাঘে-গোরুতে একঘাটে জল খেত, তাঁকেই এবার ভোটের ময়দানে দেখা যাবে না।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূম (Birbhum) জুড়ে দফায় দফায় বোমাবাজি, মারধর ও খুনের ঘটনা অব্যাহত বেশ কিছুদিন ধরে শাসকদলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণের পদুমার প্রাক্তন অঞ্চল সহসভাপতিকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নিয়ে জেলা তৃণমূলের সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সবাই ভোটে দাঁড়ানোর জন্য টিকিট চাইছে। সবাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এমনটা হতে পারে না। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই সমস্ত গণ্ডগোল করা হচ্ছে। আমরা সবরকমভাবে এইসব বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছি। কোনওভাবেই শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে দেওয়া যাবে না। “
গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পরেই দলের জেলা সভাপতি পদে নতুন কাউকে আনার সিদ্ধান্ত নেয়নি তৃণমূল। নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক সভা ব্লক থেকে অঞ্চলের খোঁজ নিতেন বীরভূম জেলা সভাপতি। কেষ্ট জেলে যাওয়ায় জেলার কর্মী সমর্থকদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে তা আন্দাজ করে, কিছুদিন আগে নেতাজি ইন্ডোরের দলীয় সভা থেকে কেষ্টর পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেছিলেন, “কেষ্টকে বীরের সম্মানে ফিরিয়ে আনতে হবে। BJP ভেবেছে ও না থাকলে জেলায় সংগঠন ভেঙে পড়বে। কিন্তু আপনাদের দ্বিগুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাঠে নেমে দলের কাজ করতে হবে।”
তৃণমূল সূত্রে খবর, কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে জেলার ১০ জন বিধায়ক ও চার শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। বিধায়কদের কাছ থেকে ব্লক সভাপতিদের পাঁচ বছরের কাজের খতিয়ান মিলিয়ে দেখা হবে। জেলার বেশ কয়েকজন ব্লক সভাপতিকে নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভ থাকায় সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। অনুব্রতহীন বীরভূমের পরিস্থিতি সামলাতে অভিষেক কী দাওয়ার দেন, সেটাই এখন দেখার।
