স্নেহাশিস নিয়োগী

‘ভুলে’র তালিকা ওয়েবসাইটে টাঙাতেই ফোনের বন্যা এসএসসি (SSC) অফিসে। এসএসসি প্রকাশিত ১৮৩ জনের তালিকায় নাম থাকা কেউ কেউ জানতে চাইছেন, তিনি নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, কিন্তু কাজে যোগ দেননি। তা হলে এখন কী করবেন? আবার কারও প্রশ্ন, তিনি তালিকা প্রকাশের আগেই ইস্তফা দিয়েছেন শিক্ষকতায়। তাঁর কী করণীয়? কেউ কেউ আবার কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে জানাচ্ছেন, আদালতের নির্দেশে আগেই ইস্তফা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তা হলে আর কী করার আছে! এঁদের অনেকের জিজ্ঞাস্য, মামলার জন্যে তাঁরা কি আইনজীবী নিয়োগ করবেন এ বার? ফোনের ঠেলা সামলাতে এখন হিমশিম খাচ্ছেন এসএসসির (SSC) আধিকারিকরা।

SSC Scam In West Bengal : এসএসসির ‘অবৈধ’ তালিকায় তিন বছর আগে রাস্তায় বসা ত্রয়ী
নবম-দশমে যে সব শিক্ষকের নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের নামের তালিকা ওয়েবসাইটে টাঙাতে এসএসসিকে (SSC) নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার সেই তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে কমিশন। আদালতের নির্দেশ ছিল, ওই ১৮৩ জনের মধ্যে কারা এখনও চাকরি করছেন বা সরকারি বেতন পাচ্ছেন এবং কত জন ইস্তফা দিয়েছেন–তার বিশদ তথ্য জোগাড় করতে হবে এসএসসিকে (SSC)। সূত্রের খবর, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের (ডিআই-মাধ্যমিক) রিপোর্ট বলছে, নবম-দশমের ওই তালিকার ৫০ শতাংশেরও বেশি নিয়োগপত্র পেয়েও কাজে যোগ দেননি। আর কাজে যোগ দেওয়া ৮০ জনের মধ্যে কেউ কেউ আবার মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে অন্যত্র বদলিও হয়ে গিয়েছেন।

SSC Scam:’অযোগ্য’ ১৮৩ প্রার্থীর নাম প্রকাশ্যে, ওয়েবসাইটে তালিকা আপলোড কমিশনের
এসএসসি’র মাধ্যমে ‘ভুল’ সুপারিশ পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের আদালতের নির্দেশে ‘স্বেচ্ছা’য় ইস্তফা দেওয়ার কথা ছিল ৯ নভেম্বর। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মোটে চার জন পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু গত ক’দিনে সেই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে! সংখ্যাটা ৩০ পেরিয়েছে। নিয়োগপত্র পেয়েও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী পদে যোগ না-দেওয়া প্রার্থীদের নিয়ে কমিশনের কর্তারাও ধন্দে।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর সিবিআইয়ের প্রাথমিক রিপোর্টে ৮,১৬৩ জন শিক্ষক-কর্মীর বেআইনি নিয়োগের তথ্য পেয়ে জানান, স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিলে আদালত ব্যবস্থা নেবে না। না-হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তবে ইতিমধ্যে ‘র‍্যাঙ্ক জাম্প করে নিয়োগে’র সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের কারও কারও সুপারিশপত্র এসএসসিই (SSC) প্রত্যাহার শুরু করেছে। তা নিয়েও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আইনজীবীদের কেউ কেউ। তাঁদের বক্তব্য, এসএসসিই প্রার্থীদের নিয়োগের সুপারিশ করেছিল। এখন আদালতের নির্দেশে কমিশন উল্টো পথ ধরেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাথমিকের ২৬৮ জনের চাকরি খারিজের পর তা ফেরাতে পর্ষদের বাধ্য হওয়ার উদাহরণও টানছেন অনেকে। তাঁদের যুক্তি, সুপারিশপত্র প্রত্যাহারের ফলে চাকরি হারানো প্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে জানাতেই পারেন, তাঁদের নিয়োগপত্র দিয়েছিল এসএসসি (SSC)। এখন তারাই বিনা শুনানিতে কী ভাবে সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করে!

Justice Abhijit Gangopadhyay: ‘অনেক বড় ইঁদুর এবার জালে উঠবে’, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মন্তব্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
কমিশন অবশ্য এখনও যাচাই করে উঠতে পারেনি ‘ভুল’ সুপারিশের তালিকায় নাম থাকা ১৮৩ জনের মধ্যে কেউ শিক্ষকতায় যোগদান করেননি বলে চিঠি দিয়েছেন নাকি সিবিআইয়ের (CBI) আট হাজারি তালিকায় তাঁদের নাম রয়েছে। আবার যাঁরা ফোন করছেন, তাঁরাই চিঠি দিচ্ছেন কি না।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *