বারাসত নবপল্লির বাসিন্দা, অরিন্দম দাশগুপ্ত, তথাগত রায়চৌধুরী ও সুমিত দাস ২ এপ্রিল রওনা দিয়ে ৩ তারিখ সিকিমে পৌঁছন। ৪ এপ্রিল ১৭ মাইলে ঘুরতে গিয়ে ভয়ঙ্কয় তুষারধসের কবলে পড়েন তাঁরা। ঝর্ণার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সময়ই তুষারধসের হঠাৎ করেই নেমে আসে।
হাড়হিম করা ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, আধঘণ্টারও বেশি সময় তাঁরা বরফের নীচে চাপা পড়েছিলেন। সুমিতের গোটা দেহ বরফের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় কোনওক্রমে তাঁরা সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরছেন বলেই জানান তিনজন।
তাঁরা বলেন, “আমরা ৩ এপ্রিল রাতের হোটেল পৌঁছেছিলাম। পরেরদিন দুপুরে গাড়ি ভাড়া করে ছাঙ্গু,বাবা মন্দির,ও নাথুলা পাস যাওয়ার উদ্দেশে হোটেল থেকে বাইরে বের হয়। ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ১৫ মাইল অবধি যাওয়ার অনুমতিও মিলেছিল। শেয়ার গাড়ির চালক বলেন, আরও কিছুটা যাওয়ার অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। সেইমতো এগিয়ে গিয়ে অন্যান্য পর্যটকদের মতো একটি ঝর্ণার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলাম। তখনও গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। সেকেন্ডের মধ্যে ভয়ঙ্কর বরফের চাঁই এসে অন্যান্যদের মতো আমাদেও ঢাকা দিয়ে দেয়।”
তিন যুবকের বিবরণ থেকে জানা গিয়েছে, আধঘণ্টারও বেশি সময় বরফের নীচে চাপা পড়েছিলেন সুমিত। অরিন্দম ও তথাগতদের কোমর থেকে নীচ থেকে দেহের বাকি অংশ বরফে চাপা পড়ে যায়। সুমিত সেখানেই জ্ঞান হারিয়েছিল বলে জানান তাঁরা। সেনা জওয়ানরা বেলচা দিয়ে বরফ সরিয়ে সেখান থেকে সুমিতকে বের করেছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। সেনা ক্যাম্পে সুমিতের প্রাথমিক চিকিৎসার পর সিকিমের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অরিন্দম ও তথাগত জানিয়েছেন বাড়িতে ফিরে এলেও চোখ বন্ধ করলেই ওই ভয়ঙ্কর দৃশ্য বারবার তাঁদের চোখের সামনে ভেসে উঠছে। অরিন্দম জানিয়েছে, মৃত ৭ জনের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে যাঁকে তিনি খুবই কাছ থেকে বরফের নীচে চাপা পড়ে যেতে দেখেছেন। প্রকৃতি যেকোনও সময় ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে তা স্বীকার করছেন তাঁরা। এমনকী আগামী দিনে সিকিম ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ এলে যাবেন কিনা, সেটাও এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না ওই তিন যুবক।