আবার অনেকেই ঠাণ্ডা পানিয় বাদ দিয়ে স্পেশাল কুলফিতে মজেছেন। শ্রীরামপুরে এসে কুলফি খাওয়া হয়নি এমন মানুষ হয়তো হাতেগোনা কয়েকজন। কারণ শুধু এই জেলার মানুষ নন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মানুষ ছুটে আসেন এই স্পেশাল কুলফি খাওয়ার জন্য।
শুধুমাত্র গরমের সময় নয়, বছরের প্রতিটা দিনেই এই স্পেশাল কুলফি খাওয়ার জন্য মানুষের ভিড় লেগে থাকে দোকানের বাইরে। একসময় এই দোকান টয় হাউস নামে পরিচিত হলেও বর্তমানে দুর্গা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার নামে পরিচিত। শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন মার্কেট এলাকায় রয়েছে শ্রী দুর্গা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার।
সেই দোকানেই বছর ২৬ আগে তৎকালীন মালিক রঞ্জন দাস চালু করেছিলেন এই স্পেশাল কুলফি বিক্রি। সেই সময় কুলফির দাম ছিল আট টাকা। ২৬ বছর পরে মালিকানা হস্তান্তর হয়ে যখন বাবা থেকে ছেলের কাছে এসেছে, তখন তার দাম হয়েছে ৩০ টাকা। তবে এই ২৬ বছরে দাম বাড়ার জন্য ক্রেতার সংখ্যা কমেনি, বরং বেড়েছে। এখন প্রতিদিন প্রায় পাঁচশো কুলফি বিক্রি হয়।
গরমের সময় চাহিদা আরও বেশি থাকলে তখন আরও বেশি কুলফি তৈরি করা হয়। কিভাবে মিষ্টির দোকানে কুলফি বিক্রি শুরু হল তার কাহিনীও খুব মজার। তৎকালীন মিষ্টির দোকান মালিক রঞ্জন দাস পেশায় একজন ময়রা ছিলেন। নতুন কোনও স্বাদের মিষ্টি তার ভালো লাগলে তা তিনি নিজের হাতে বানানোর চেষ্টা করতেন। এইরকমই একদিন রঞ্জন বাবু কলকাতায় এক বিয়ে বাড়িতে খেতে গিয়েছিলেন সপরিবারে।
সেখানে কুলফির সঙ্গে ফালুদা দিয়ে এক অপূর্ব স্বাদের কুলফি তিনি খেয়েছিলেন। তখন থেকেই তার মনে ইচ্ছা জাগে তিনি তার মিষ্টির দোকানে এই কুলফি তৈরি করবেন। তবে সেই স্বাদ তৈরি করাও ছিল খুব কঠিন। দুধ,কাজু,খোয়া খির দিয়ে যে স্বাদের কুলফি তিনি তৈরি করেছিলেন, তার স্বাদ সমস্ত মানুষের মুখে আজও লেগে রয়েছে।
প্রতিদিনই এই কুলপি খেতে ভিড় জমান শয়ে শয়ে মানুষ। এক ক্রেতা নার্গিস শবনম বলেন, “কলেজ পড়াশোনার সময় থেকেই শ্রীরামপুরে আসছি, তখন থেকেই এখানে এসে কুলফি খাই। আখের রস, ঠাণ্ডা পানীয়, লেবু জুস, আইসক্রিম অনেক কিছুই আছে। তার মধ্যে আমার ভালো লাগে এই স্পেশাল কুলফি। আর শ্রীরামপুরে এসে কুলফি খাব না তা কখনও হয় না। এরকম অনেক মানুষ আছে যারা কুলফি প্রিয় তাদের মধ্যে আমিও একজন। খেয়ে দেখতে হবে না হলে বলে বোঝানো যাবে না এর স্বাদ। একটা খেলে আরও একটা খেতে মন চাইবে।”