সুকান্ত মজুমদার-দিলীপ ঘোষদের একাধিক রুদ্ধদ্বার আলোচনা থেকে বেরিয়ে এসেছিল দু’টি পরিকল্পনা। ‘প্ল্যান এ’ – শাসকদলের যে টিকিট প্রত্যাশীদের নাম প্রার্থী তালিকায় থাকবে না, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। সাংগঠনিক ভাবে বিজেপির দুর্বল এলাকাগুলিতে দলীয় প্রার্থীর হদিশ না করে তৃণমূলের ওই বিক্ষুব্ধদের কাছে বিজেপির টিকিট নিয়ে হাজির হওয়া। ‘প্ল্যান বি’ – যেখানে দলীয় প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যাবে না, সেখানে বাম-কংগ্রেস প্রার্থীদের গোপন সমর্থন জানানো। উদ্দেশ্য – এতে যদি তৃণমূল কিছুটা জব্দ হয়। দুই পরিকল্পনার মধ্যে প্রথমটাই ছিল বিজেপির বেশি পছন্দের।
কিন্তু মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরুর দু’দিন পরেও তৃণমূল প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি। কবে করবে, তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয় বিজেপির কাছে। গেরুয়া শিবিরের আশঙ্কা, কিছু জেলায় তৃণমূল এমন সময়ে তালিকা ঘোষণা করবে, যখন ইচ্ছে থাকলেও কিছু করার উপায় থাকবে না বিজেপির। তাদের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘ব্যাপারটা সহজ নয়। হাতে খুব অল্প সময়। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে টিকিট না পাওয়া বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের কার কতটা ক্ষোভ জমেছে, সেটা বুঝতেই তো দিন কয়েক কেটে যাবে! ফলে প্ল্যান এ খারিজ।’
তা হলে ধরতে হবে ‘প্ল্যান বি’। গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, দুই ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, নদিয়ার মতো জেলায় বহু আসনেই প্রার্থী দেওয়ার অবস্থায় নেই তারা। কিন্তু তৃণমূলকে ফাঁকা মাঠ ছাড়তেও তারা রাজি নয়। তাই এই এলাকাগুলিতে যেটুকু শক্তি আছে, তা দিয়েই বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীকে গোপনে সাহায্য করার পরিকল্পনা তাদের। এতে তৃণমূল হারলে কিছু কৃতিত্ব তো মিলবে!
‘প্ল্যান বি’-র সম্ভাবনা যে জোরালো হয়ে উঠেছে, তার ইঙ্গিত মিলছে দলের কোনও কোনও নেতার মন্তব্যেও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘বিজেপি সব জায়গায় প্রার্থী দেবে। কোথাও না দিলে বুঝবেন, কৌশলগত কারণেই দেওয়া হয়নি।’ তৃণমূল অবশ্য বলছে, ‘বিজেপি খড়কুটোর মতো সিপিএমকে আঁকড়ে ধরতে চাইছে। একই চেষ্টা করছে বামেরা। শেষে ওদের ডুবতেই হবে।’