২০১৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের অশান্তি থেকে শিক্ষা নিয়েই কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে বিস্তর রাজনৈতিক টানাপড়েন হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের কমিশনের তৎপরতা নিয়েও রাজনীতির পারদ চড়েছে।
এরমধ্যে রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করলেন, নির্বাচনে প্রার্থী খুঁজে না পেয়েই বিজেপি আদালতে গিয়ে ভোট আটকাতে চাইছে। পাশাপাশি যদিও কোনও জায়গায় বিরোধীদের মনোনয়ন দাখিল করতে তৃণমূলের কেউ বাধা দেয়, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে সেই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের নবজোয়ার যাত্রায় রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় এদের গায়ে জ্বালা ধরেছে।
প্রার্থী আপনারা খুঁজে বের করুন। আমি মনোনয়ন দাখিলের বন্দোবস্ত করে দেবো।’ তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘তৃণমূলের কেউ আপনাদের বাধা দেবে না। যদি কেউ আটকায়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আমি নেব। আপনারা প্রার্থী দিলেও মানুষ আপনাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’ পাল্টা বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার বাঁকুড়া, বীরভূম সহ একাধিক জায়গায় মনোনয়ন দাখিল করতে বাধা দেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। তৃণমূল কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে?’ বিজেপি এই যুক্তি দিলেও অভিষেকের বক্তব্য, ‘মানুষ আগামী দিনে বিজেপিকে কড়ায়গণ্ডায় জবাব দিতে চায়। মাথায় রাখবেন, এমন জবাব দিতে হবে যে ৪৪০ ভোল্টের ঝটকা দিল্লিতে গিয়ে লাগে।’
এদিকে, পঞ্চায়েতে মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নোটিস করেছে। পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া থেকে ফল প্রকাশ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, দু’সপ্তাহের মধ্যে তা নিয়ে অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে কমিশন। তারা জানিয়েছে, বিশেষ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘ভারতের কোনও রাজ্যে এই নজির নেই। ত্রিপুরার পঞ্চায়েত ভোটে ৮৪ শতাংশ আসনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে বিজেপি। সেখানেও মানবাধিকার কমিশনকে দেখা যায়নি। এখানে কমিশনের নাক গলানো বিজেপির প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির প্রতিফলন।’