এই ঘটনা শুধু এই মরশুমের নয়, গত তিন বছর ধরে এই একই পরিস্থিতি শান্তিনিকেতনে, দাবি সেখানকার হোটেল মালিকদের একাংশের। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস অব্দি অর্থাৎ শীতের শুরু থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয় শান্তিনিকেতনে। সোনাঝুরি হাটে পর্যটকদের ভিড় দেখে এটা স্পষ্ট যে সেখানে উপচে পড়া পর্যটকদের ভিড়। কিন্তু, শান্তিনিকেতনের হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, ২০১৯ সালের তুলনায় অনেকটাই কমেছে পর্যটকদের সেখানে হোটেলে রাত্রিবাস। অর্থাৎ কোভিডের সময় যে ধাক্কাটা খেয়েছিল পর্যটন ব্যবসায়ীরা, তা সামলে উঠতে পারেননি।
কিন্তু, কেন রাতে শান্তিনিকেতনে থাকতে চাইছেন না পর্যটকরা?
এই প্রসঙ্গে শকুন্তলা ভিলেজ রিসর্ট এর কর্ণধার গণেশ ঘোষ বলেন, ‘২০২০ সালের করোনার পর থেকেই ধীরে ধীরে শান্তিনিকেতনের হোটেলগুলিতে কমছে পর্যটকদের রাত্রিবাস।’ এর কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ বিশ্বভারতীর কলাভবন, সংগীত ভবন, রবীন্দ্র ভবন গৌড় প্রাঙ্গন সহ আশ্রম চত্বরে আগে প্রবেশাধিকার ছিল পর্যটকদের। কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে তা বন্ধ হয়েছে। ফলে বাইরে থেকে যতটা সম্ভব দেখে ফিরে আসতে হচ্ছে পর্যটকদের।
এছাড়াও সামনাসামনি জায়গাগুলি দেখে একদিনেই ফিরে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।’ শান্তিনিকেতনের হোটেল মালিকদের একাংশের কথায়, ‘করোনার পরবর্তী সময় থেকে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে না সেভাবে।’
অন্যদিকে, শান্তিনিকেতনের গীতাঞ্জলি হোটেলের কর্ণধার প্রভাত সেন বলেন, ‘পর্যটকরা এলেও খোয়াই হাট ঘুরে ও রাস্তা থেকে বিশ্বভারতী দেখেই ফিরে কাছে পিঠে রাত্রি বাস করছেন অথবা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এছাড়াও পৌষ মেলা , বসন্ত উৎসবকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের রাত্রিবাসের প্রবণতা ছিল। কিন্তু, পৌষ মেলা, বসন্ত উৎসব বন্ধ হওয়ার কারণেও হোটেল ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে।’
ইতিমধ্যেই শীতের আমেজ উপভোগ করার জন্য অনেকেই শান্তিনিকেতন মুখী হচ্ছেন। ধীরে ধীরে করোনা পরবর্তী আর্থিক সংকটও কাটছে। ফলে নতুন করে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে, এই আশায় রয়েছেন শান্তিনিকেতনের হোটেল ব্যবসায়ীরা। এখন দেখার, গত কয়েক বছরে ব্যবসার মন্দার ক্ষতে কি প্রলেপ পড়বে চলতি বছর!