Burdwan Railway Station : প্ল্যাটফর্মে অবৈধ হকার নিয়ে রেল-বিজেপি দ্বন্দ্ব – indian railways and bjp clash over illegal hawkers on burdwan railway station platform


রূপক মজুমদার, বর্ধমান

ট্রেন প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াতেই ঠেলাগাড়িতে বর্ধমানের বিখ্যাত মিষ্টি সীতাভোগ, মিহিদানা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। কিন্তু সেই সব ঠেলাগাড়ির বিক্রির বৈধ লাইসেন্স নেই বলে দাবি করেছে রেল। এমনকী বর্ধমান স্টেশনের সাতটি প্ল্যাটফর্মে অবৈধ ভাবে ২৫টি স্টল ব্যবসা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। রেলের দাবি, ওই স্টলগুলোয় আইআরসিটিসি-র লোগো ব্যবহার করা হচ্ছে।

রেলের নিয়ম ভেঙে এই স্টলগুলো থেকে বিক্রি হচ্ছে কলা, জলের বোতল। রেলের দাবি, অবৈধ ব্যবসার কারণে প্রচুর টাকার ক্ষতি হচ্ছে তাদের। এর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। যদিও হকারদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। সম্প্রতি বর্ধমান স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের একটি স্টল থেকে খাবার কিনেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই খাবার খেয়ে ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

বিষয়টি তিনি রেলের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান। মাসকয়েক আগে প্ল্যাটফর্মের এই সব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হাওড়া থেকে আনা হয়েছিল আরপিএফের বিশাল বাহিনী। কিন্তু সেদিন বিজেপির হস্তক্ষেপে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত হয়ে যায়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়ার ফোনে উচ্ছেদ অভিযান থমকে যায়।

এ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘ঠিক কী হয়েছিল মনে নেই। দিল্লিতে আছি। গিয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাব।’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘বর্ধমান স্টেশনের বেশ কিছু ফুড স্টলের ব্যবসা করার বৈধ লাইসেন্স নেই। আমরা তদন্ত করে জেনেছি, আইআরসিটিসি-র লোগো ব্যবহার করে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা চলছে। এমনকী রেলের বিদ্যুৎও ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতি মাসে এই ভেন্ডারদের জন্য কয়েক লক্ষ টাকার রেভিনিউ লস করছে রেল। এদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই পদক্ষেপ করা হবে।’

অবৈধ স্টলের রমরমা কারবারে রেলের এক শ্রেণির আধিকারিক জড়িত বলে জানাচ্ছেন বর্ধমান স্টেশনের এক আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘স্টেশনে এই ভেন্ডাররা কী ভাবে বসেছিলেন জানি না। এক জন অসুস্থ হওয়ায় এখন শোরগোল পড়েছে। এর পিছনে রেলের এক শ্রেণির আধিকারিকও জড়িত। সঠিক তদন্ত হলে তাঁদের নাম সামনে আসবে।’

নিজেদের পক্ষে যুক্তি পেশ করে হকারদের হয়ে বিপিন সিং বলেন, ‘এটা ঠিক বলা হচ্ছে না। আমাদের বাবাদের নামে রেল লাইসেন্স দিয়েছিল। পরে রেলের নিয়মে উত্তরাধিকার সূত্রে সেই লাইসেন্স পেয়েছে অনেকে। এটা হয়েওছে এখানে। কিন্তু এখন রেল আমাদের সেই সুবিধা দিচ্ছে না। এত হকারের সঙ্গে তাঁদের পরিবার জড়িয়ে রয়েছে। তাঁদের কথা ভেবে মানবিক সিদ্ধান্ত নিক রেল।’

Howrah to Bandel Train : ওভারহেড তার ছিঁড়ে বিপত্তি! হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখায় ব্যাহত ট্রেন চলাচল, সমস্যায় যাত্রীরা
রেল হকারদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। বর্ধমানে দলের নেতা খোকন সেন বলেন, ‘আমরা অসহায় হকার ভাইদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সাংসদ আলুওয়ালিয়াজির হস্তক্ষেপে তখন উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়েছিল। আমরা ওঁকে বলেছি, রেল যাতে কোনও পদক্ষেপ না করে তার জন্য কথা বলতে। না হলে এতগুলো পরিবার না খেতে পেয়ে মারা যাবে।’

যদিও বর্ধমান স্টেশনের কর্মাশিয়াল ম্যানেজার বিজি প্রসাদ বলেন, ‘স্টেশনের এক থেকে সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও আরও বহু জায়গায় অবৈধ হকার রয়েছে। এদের থেকে রেল কোনও ভাড়া পাচ্ছে না। প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা আয় হারাচ্ছে রেল।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *