১১ নভেম্বর ভোরে গোঘাটের মামুদপুরের ব্যবসায়ী আসগর আলি ভাইপো মফিজুর রহমানকে নিয়ে গোরুর হাটে যাবেন বলে বের হন। মফিজুর বাইক চালাচ্ছিল। আসগর ছিলেন পিছনে বসে। মাঝরাস্তায় দুষ্কৃতীরা তাঁদের আটকায়। সঙ্গে থাকা সাড়ে তিন লাখ টাকা চায়। দিতে রাজি হননি আসগর। তখনই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা। রড-লাঠি দিয়ে বেদম মারতে থাকে।
পরে পুলিশের কাছে মফিজুর দাবি করে, সে-ও কাকাকে বাঁচাতে গিয়েছিল। তাকেও বেদম মারে দুষ্কৃতীরা। অত ভোরে রাস্তাঘাটে লোক না থাকায়, কারও এগিয়ে আসার প্রশ্নও ছিল না। কাকা-ভাইপো দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়েছিল। সকালের দিকে লোকজন বেরিয়ে জখম দু’জনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। আসগরের অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তিরত করা হয়। ২৪ নভেম্বর কলকাতার হাসপাতালেই আসগর মারা যান।
আসগরের মৃত্যুর পর লোকজন ক্ষেপে ওঠেন। এ ভাবে রাস্তায় ফেলে এক ব্যবসায়ীকে খুন করা মেনে নিতে পারেননি স্থানীয়রা। বারংবার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অবরোধ-বিক্ষোভও হয়। কয়েক দিন আগে সেই খুনের তদন্তে পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জেরা করেই আসগরের ভাইপো মফিজুরের নাম পায়। এমনিতেই গোড়া থেকে মফিজুরের উপর সন্দেহ ছিল পুলিশের। কারণ পুলিশকে মফিজুর বলেছিল, হামলাকারীরা সামনে থেকে প্রথম আঘাত হানে। অথচ মফিজুরের আঘাত ছিল পিছনে।
যে বাইক চালাচ্ছিল, তাকে সামনে থেকে হামলা করলে আঘাত কী করে পিছনে লাগে, তা নিয়ে প্রশ্ন জেগেছিল তদন্তকারীদের মনে। তা ছাড়া মফিজুরের আঘাত এতটাই কম ছিল যে প্রাথমিক চিকিৎসার পরেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অথচ একই হামলাকারীদের মারে শেষমেশ মারাই যান আসগর। এ সবই ভাবাচ্ছিল পুলিশকে। তারপর দু’জন দুষ্কৃতী ধরা পড়ার পর মফিজুলের নাম নেওয়ায় আর দেরি করেনি পুলিশ। শুক্রবার রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কাকাকে খুনের বরাত দেওয়ার কথা স্বীকার করে নেয়।