রাজ্যে ভাঙা সাঁকো পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন অনেকেই। প্রায়ই কোথাও না কোথাও বড়-ছোট দুর্ঘটনার খবর মেলে। সেই সময় এই সাঁকো ভেঙে সেতু তৈরি হওয়ায় খুশি গ্রামবাসী। এ দিন সেতু উদ্বোধনের পরেই ডুকরে কেঁদে উঠলেন মনসা মাইতির মা অলোকা মাইতি। চোখ ভর্তি জল নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে আজ থাকলে সংসার সামলাত বোধ হয়। ১৯৮৪ সালে আমরা শশা চাষ করেছিলাম। মেয়েকে জমিতে পাঠানো হয়েছিল। যাওয়ার সময় সাঁকো থেকে সে খালে পড়ে যায়। আমার মতো যেন আর যেন কারও কোল খালি না হয়। বিধায়ক জানান আমার মেয়ের নামেই সেতুর নাম রাখা হবে।’
তারকেশ্বরের জগন্নাথপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে একটি খাল। প্রায় দশটি গ্রামের সঙ্গে এই খালের উপর সাঁকোটি ছিল যোগাযোগের মাধ্যম। সাঁকো পেরিয়েই যেতে হতো স্কুলে। নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ছেলেমেয়েরা স্কুলে গেলে চিন্তায় থাকতেন অভিভাবকেরা। ১১ বছরে পাকা সেতুর দাবিতে বারবার সরব হয়েছিলেন বিরোধীরাও। শেষে দীর্ঘ চার দশক পর সেই দাবি মেনে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর এ দিন বিকেলে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেতুর উদ্বোধন করেন তারকেশ্বর বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায়। উপস্থিত ছিলেন তারকেশ্বর ব্লক আধিকারিক-সহ একাধিক কর্তারা।
সেতু উদ্বোধনের পরই গ্রামবাসীদের চোখে জল। একে অপরকে মিষ্টি খাওয়াতে ব্যস্ত তাঁরা। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ মিটার চওড়া ও ১৯ মিটার লম্বা এই সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকা। ‘ফিফটিন ফিন্যান্সের’ আর্থিক সহায়তায় এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তারকেশ্বর বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি। সফল হয়েছি। এই এলাকার অগণিত মানুষের দাবি পূরণ করতে পেরে আমরা খুশি। আর যে মায়ের কোল খালি হয়েছিল। সেই মায়ের মেয়ের নামেই এই সেতুর নামকরণ করা হবে। আইনি দিকটা দেখে আমরা ব্যবস্থা করছি।’