খালের দু’পাড়ের জবরদখলকারীদের তোলা যায়নি। তরল ও কঠিন বর্জ্য সরাসরি খালে ফেলাও বন্ধ হয়নি। আগের থেকে অনেক বেশি করে কলকারখানার বিষাক্ত জল মিশছে খালে। নতুন মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। গত সোমবার শুনানিতে বিচারপতি বি অমিত স্থালেকর এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য অরুণ বর্মা নির্দেশ দেন, আদালতের অর্ডার কেন পালন করা হয়নি, তা চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্যকে।
তরল এবং কঠিন বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দূষণ কেন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি, তা নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে হলফনামা চাওয়া হয়েছে। নোটিস পাঠানো হয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভাকে। কলকাতা পুর-এলাকার পাশাপাশি, বিধাননগর, দক্ষিণ এবং উত্তর দমদম, পানিহাটি, কামারহাটি, বরাহনগর পুরসভা ও হিডকোর মতো এলাকার নিকাশির অন্যতম মাধ্যম বাগজোলা খাল।
এলাকাগুলির বর্জ্যও বহন করে বাগজোলা। অভিযোগ, খালের দু’দিকে কঠিন বর্জ্য এবং বাতিল নির্মাণ সামগ্রী জড়ো করে রাখা হচ্ছে। যেগুলি পরে জলে মিশছে। যার জেরে দূষণ মারাত্মক আকার নিচ্ছে। সম্প্রতি এই খাল পরিদর্শন করেন সুভাষ। দূষণের অভিযোগ ওঠায় ২০১৭ সালে বাগজোলা খাল নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে এনজিটি। সেই মামলায় এনজিটি সুভাষকে আদালত বান্ধবের দায়িত্ব দেয়।
তিনি আদালতকে একটি রিপোর্ট দিয়েছিলেন। ২০২২-এর মে মাসে মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়। মুখ্যসচিব সে বছরই ১৫ নভেম্বর অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট দাখিল করেন। যার ভিত্তিতে ডিসেম্বরে চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করে আদালত। নির্দেশে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। কিন্তু অভিযোগ, খাল ড্রেজিং ছাড়া আদালতের কোনও নির্দেশই মানা হয়নি।
গত ১০ জানুয়ারি কেষ্টপুর এলাকায় ফের খাল পরিদর্শন করেন সুভাষ। তিনি বলেন, ‘এনজিটি-র আগের নির্দেশ তো মানা হয়ইনি, উল্টে আইন ভেঙে খালের দু’পাড় দখল করে অসংখ্য ঝুপড়ি তৈরি হয়েছে। প্রতিটির সঙ্গে রয়েছে শৌচাগার, যার বর্জ্য সরাসরি খালে মিশছে। এ ছাড়াও আদর্শপল্লি, গৌরাঙ্গনগর, জগৎপুর এলাকায় পাকাবাড়ি, দোকান, পাকা শৌচালয় তৈরি হয়েছে।’
তাঁর অভিযোগ, খালে যে ভাবে আবর্জনা এবং প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে, তাতে ড্রেজিংয়ে যেটুকু নাব্যতা বেড়েছিল, তা-ও নষ্ট হতে চলেছে। বর্ষায় নিকাশির সমস্যা ভয়াবহ আকার নেবে। সুভাষ নতুন করে যে মামলা করেন, তাতে এই বিষয়গুলিই তুলে ধরা হয়েছে।