এই সময়: অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন স্বামী, বেশ কিছুদিন ধরেই সন্দেহ করছিলেন স্ত্রী। কিছুদিন পর স্বামী সুশীল ঘোষ তাঁর স্ত্রী প্রতিমাকে বলেন, ‘তোমার সঙ্গে আমার বনিবনা হচ্ছে না। নতুন করে সংসার করতে যাচ্ছি। ফের বিয়ে করব।’ এ কথা শুনে মাথায় বাজ পড়েছিল প্রতিমার। সেদিনই তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, ‘স্বামীকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে।’২৩ ডিসেম্বর, ২০১০ সাল। কনকনে শীতের সকালে লেক থানা এলাকায় গোবিন্দপুর রোডের বাড়িতে নৃশংসভাবে খুন হন সুশীল ঘোষ। তদন্তে নেমে প্রথমে পুলিশ মনে করছিল, ডাকাতি বা চুরি করতে এসে খুন করা হয় সুশীলকে। পরে তদন্তে জানা যায়, মূল চক্রান্তকারী তাঁর স্ত্রী প্রতিমা ঘোষ। খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাঁকে করে সুপারি কিলার সুজিত ঝা ওরফে পাপ্পু, সনৎ মণ্ডল এবং আশিস দেবনাথকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মঙ্গলবার আলিপুরের অষ্টম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মীর রশিদ আলি ওই মামলার রায় দিতে দিয়ে ষড়যন্ত্র করে খুনের অপরাধে ওই চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এই মামলায় সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন সর্বানী রায়। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় মামলা লড়েন স্বপন চক্রবর্তী।

তিনি জানান, প্রতিমা ঘোষের স্বামী দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছিলেন বলে আদালতের গোপন জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন প্রতিমা। তিনি এও দাবি করেন, স্বামীকে উচিত শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু খুন করানোর কোনও পরিকল্পনা ছিল না। যদিও তাঁর মেয়ে এবং ছেলে মায়ের বিরুদ্ধেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। সুশীল খুন হওয়ার পরদিন ভোরে মেয়ের বাড়িতেই উঠেছিলেন প্রতিমা। তাঁর নাইটিতে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ হয় মেয়ের।

North 24 Parganas Incident: চুরির জিনিসের ভাগ নিয়ে সঙ্গীকে খুনের অভিযোগ

পুলিশ সূত্রে খবর, সুপারি কিলারদের টাকা মেটাতে নিজের গয়না স্থানীয় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে বন্ধক রেখেছিলেন প্রতিমা। সুজিত, সনৎ এবং আশিসকে প্রায় ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। শীতের রাতে প্রতিমার পরিকল্পনা মাফিক তিন অভিযুক্ত বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুশীলকে কুপিয়ে খুন করে তারা।

পুলিশ সূত্রে খবর, সুশীলের গলার নলি এবং হাতের শিরা কাটা ছিল। পাশেই বাড়ি সুশীলের ভাই বিশ্বজিৎ ঘোষের। তিনি সকালে দাদাকে ডাকতে এসে ঘটনাটি দেখেন। এর পর লেক থানায় খবর দেন তিনি। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার হয় রবীন্দ্র সরোবর থেকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version