আবার মুর্শিদাবাদের গোথা হাইস্কুলে নিয়োগ কেলেঙ্কারির মামলায় বিচারপতি বসুর নির্দেশ, ২০১১ থেকে ২০১৬-র মধ্যে রাজ্যজুড়ে যত নিয়োগ হয়েছে, সে-সব খতিয়ে দেখে কোথাও বেআইনি কিছু পেলে তদন্ত করতে হবে সিআইডিকে। আদালত এই তদন্তভার তুলে দিয়েছে গোথা স্কুলে দুর্নীতির তদন্তে গঠিত সিআইডির সিটের হাতেই।
আদালতের নির্দেশ, কারও বিরুদ্ধে তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে সিআইডি। তবে নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের মধ্যেই সিআইডি’কে আদালত এই তদন্তভার দেওয়ায় অনেকের মনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। গোথা-মামলায় সোমবার শুনানি চলাকালীন সিআইডি আদালতে জানায়, ছেলে অনিমেষ তিওয়ারিকে অবৈধ পাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়াই শুধু নয়, প্রধান শিক্ষক আশিস তিওয়ারি এর আগেও ২০১১ সালে অন্য এক জনের নিয়োগপত্রে নিজের ঘনিষ্ঠ এক জনকে চাকরি দেন। যা শুনে স্তম্ভিত হাইকোর্ট।
আদালতের প্রশ্ন, একটা রেকমেন্ডেশন ভেঙে ২-৩ জনের চাকরি কী করে সম্ভব? তার পরেই নতুন করে রাজ্যব্যাপী এমন অনিয়মের তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের হুঁশিয়ারি, ঠিকঠাক না এগোলে তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১১-র পর থেকে সমস্ত নিয়োগ নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি। প্রয়োজনে নথি সংগ্রহ করবে। তার পরে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
গোথা হাইস্কুলের এই মামলাই অন্য মোড় নেয় পাহাড়ে নিয়োগ-দুর্নীতির প্রসঙ্গ সামনে আসতেই। মামলাকারীদের আইনজীবী বলেন, স্কুলশিক্ষা দপ্তর অভিযোগ দায়ের করলেও বিধাননগর উত্তর থানা তা এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করছে না। যা শুনে চরম বিস্ময় প্রকাশ করে হাইকোর্ট।.বিচারপতির প্রশ্ন, শিক্ষা দপ্তরের অভিযোগ কেন এফআইআর হিসেবে নিচ্ছে না পুলিশ? এই পরিস্থিতিতে বিধাননগর উত্তর থানার আইসিকে তলব করেছে আদালত।
প্রসঙ্গত, পাহাড়ে নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে একটি চিঠি আদালতে জমা দেয় সিআইডি। ওই চিঠিতে ওই দুর্নীতিতে তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী, এমনকী প্রভাবশালী যুব-ছাত্রনেতার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সেই চিঠি ধরেই এর আগে বিচারপতি বসুর বেঞ্চ তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল সিআইডিকে। সেই অনুযায়ী শিক্ষা দপ্তর এফআইআর দায়ের করতে গেলে থানা ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
যদিও এ দিন এই মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্যের তরফে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। আবেদন খারিজ করে আজ, মঙ্গলবারই শুনানি ধার্য করেছে আদালত।