ছোটদের খেলার জন্যই সম্ভবত তৈরি করা হয়েছিল ছোট্ট গাড়িটা। বলদে টানা একটা গাড়ি, যার চার কোণে চারটি চাকা। সিন্ধু সভ্যতার অবশেষ থেকে পাওয়া এই গাড়ির হুবহু রেপ্লিকার দেখা পাওয়া যাবে বিআইটিএম-এর ট্রান্সপোর্ট গ্যালারিতে। পাশেই রাখা একটি গ্রিক ও একটি রোমান রথ। রথের দু’পাশে বড় দু’টো চাকা আর রতটা কাঠের ওপর ধাতুর পাত পিটিয়ে তৈরি। কিছুটা দূরেই রয়েছে নানা ধরনের জলযানের প্রদর্শনী । এগুলোয় অবশ্য চাকা নেই।
তবে, সারঙ্গ, ডুন্ডা, ক্যাটামারান থেকে শুরু করে নানা ধরনের বজরা, ময়ূরপঙ্খী জাহাজ, ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির যুদ্ধজাহাজ থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার — কী নেই এই গ্যালারিতে! বিআইটিএম জাদুঘর ঘুরতে ঘুরতে কারও যদি ইচ্ছা করে ট্রেনের কামরায় বসার সাধ মেটানোর, তাহলে সেই ইচ্ছাও পূর্ণ করা সম্ভব হবে এই ট্রান্সপোর্ট গ্যালারিতেই রয়েছে আস্ত একটি ট্রেন কম্পার্টমেন্টও।
এখানেই শেষ নয়, কয়েক মিটার দূরত্বের মধ্যে দেখা যাবে রোলস রয়েস ফ্যান্টম-ওয়ান গাড়ি এবং একেবারে প্রথম যুগের ‘হবি হর্স’ সাইকেলকে। জর্জ স্টিভেনসনের তৈরি করা রেল ইঞ্জিন কী ভাবে কাজ করত, কী ভাবেই বা ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ ট্রেন কাজ করে — সেটাও হাতে-কলমে দেখা যাবে এই গ্যালারিতেই।
বিআইটিএম-এর মতুন এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে সেখানকার অধিকর্তা শুভব্রত চৌধুরী বলেন, ‘নতুন এই গ্যালারি তৈরির পরিকল্পনা আসলে ইন্টারন্যাশনাল মিউজ়িয়ম এক্সপোর অংশ। আমাদের পরিকল্পনা একই ছাদের নীচে চাকা তৈরি থেকে শুরু করে পরিবহণের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোকে মানুষের সামনে নিয়ে আসা।’ ট্রান্সপোর্ট গ্যালারির সবচেয়ে আকর্ষক বিষয়টি হলো কিউআর কোড স্ক্যান করে কিছু কিছু যানবাহণের চলার পদ্ধতি দেখার সুবিধা। যেমন ডিঙি নৌকার জন্য নির্দিষ্ট কোড স্ক্যান করলে ফোনের স্ক্রিনে দেখা যাবে ওই নৌকা সমুদ্রে চললে কেমন দেখতে লাগবে।
এই গ্যালারির যে প্রদর্শন দর্শকদের কাছে বিপুল জনপ্রিয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেটি হলো ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো চলার মডেল। মাটির ৩২ মিটার গভীরে যখন মেট্রোর রেক চলছে তখন বাইরেটা কেমন থাকে সে বিষয়ে মেট্রোর যাত্রীরা কিছুই বুঝতে পারেন না। কিন্তু এই মডেল দেখলে দর্শকরা বুঝতে পারবেন গঙ্গার রিভার বেডের কতটা গভীর দিয়ে মেট্রোর রেক চলাচল করছে।