এনডিএ শরিকদের দাবি-দাওয়া পূরণ করতেই হিমশিম খাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী, রাজনাথ সিং-রা। এরপরেও মন্ত্রিত্বের স্বপ্ন দেখছে বঙ্গ-বিজেপি! তাদের আকুতি, ‘পূর্ণমন্ত্রী না হোক, মোদী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কি ঠাঁই হতে পারে না বাংলার দু’একজন বিজেপি সাংসদের।’সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে রবিবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গে শপথ নেবেন মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই। সেই তালিকায় কাদের নাম থাকবে তা নিয়ে আপাতত জল্পনা তুঙ্গে। ২০১৯-এ বাংলা থেকে ১৮টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। অথচ এ রাজ্যের একজন বিজেপি সাংসদকেও পূর্ণমন্ত্রী করেননি নরেন্দ্র মোদীরা। প্রথম দফায় মাত্র দু’জনকে বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল।তাঁরা হলেন, বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরি।
পরে দুজনকে বাদ দিয়ে নিশীথ প্রামাণিক, জন বার্লা ও সুভাষ সরকারকে মন্ত্রী করা হয়। যদিও কেউ পূর্ণমন্ত্রী হননি। এ বার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির আসনসংখ্যা কমে ১৮ থেকে ১২ হয়েছে। এর ওপর আবার মোদীর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে শরিক দলগুলিকে মন্ত্রিত্বের ভাগ দিতেই হবে। ইতিমধ্যে এনডিএ-এর দুই গুরুত্বপূর্ণ শরিক নীতীশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নায়ডু নিজেদের দাবিদাওয়া স্পষ্ট করে দিয়েছেন। নীতীশ চারজন পূর্ণমন্ত্রী এবং একটি প্রতিমন্ত্রী চেয়েছেন মোদীর কাছে।
চন্দ্রবাবু তিনটি পূর্ণমন্ত্রী ও দুটি প্রতিমন্ত্রী চেয়ে তদ্বির করেছেন। এ ছাড়াও চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি, জিতনরাম মাঝির হাম, উত্তরপ্রদেশের আপনা দল, মহারাষ্ট্রের একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনাও মওকা বুঝে নিজেদের প্রাপ্যের ঝুলি ভরতে চাইছে। তাদের সবার দাবি-দাওয়া মিটিয়ে বাংলার বিজেপি সাংসদদের দিকে তাকানোর অবকাশ মোদীদের আদৌ কতটা থাকবে, তা নিয়ে ঘোর সংশয় আছে। তা ছাড়া, এ বার মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাট থেকেই বিজেপি সব চেয়ে বেশি আসন জিতেছে।
ফলে ওই দুই রাজ্য যে মোদী মন্ত্রিসভায় বাড়তি গুরুত্ব পাবে সেটাও একরকম নিশ্চিত। এই অবস্থাতেও হাল ছাড়ছে না বঙ্গ-বিজেপির একাংশ। এ রাজ্যের বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদ মন্ত্রিত্বের দাবিতে তাল ঠুকতেও শুরু করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতেই দলের হুইপ মেনে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন বাংলার বিজেপি সাংসদরা।
সেখানে পৌঁছে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘মন্ত্রিত্ব কে না চায়, আমিও চাই। এ রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের মধ্যে আমিই সব থেকে সিনিয়র। তিনবারের সাংসদ। বিধায়কও ছিলাম। তা ছাড়া বেশ কিছু বছর আমি দলের যুব মোর্চার সভাপতিরও দায়িত্বও সামলেছি। ফলে আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে।’
বিজেপির আরও এক সাংসদের কথায়, ‘বাংলায় আমাদের আসন কমেছে। কর্মীদের মনোবল ভেঙে গিয়েছে। এখনই তো সময় রাজ্য থেকে কয়েকজনকে মন্ত্রী করার।’ তবে এনডিএ শরিকরাই যে বাংলার বিজেপি সাংসদদের পথের কাঁটা তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আর তাই ভোটে হেরেও এ রাজ্যের জয়ী সাংসদদের হয়ে ঘুরিয়ে সওয়ালও করেছেন দিলীপ ঘোষ।
এদিন নীতীশ, চন্দ্রবাবুদের দাবি-দাওয়া নিয়ে দিলীপের কটাক্ষ, ‘হাতি কাদায় পড়লে ব্যাঙ লাথি মারে। তবে মোদী-শাহ জুটিকে আমি চিনি। ওঁরা পুরোনো পার্টনার। শরিকরা একটু বেশিই দর হাঁকছেন।’