তা হলে কি পুর-পরিষেবা নিয়ে মানুষের মনে চাপা ক্ষোভ রয়েছে, নাকি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ? এ বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে একমাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
প্রাথমিক ভাবে ওয়ার্ডের ফলাফলের যে বিশ্লেষণ দলীয় নেতৃত্ব করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণের তুলনায় উত্তর কলকাতায় শাসকদলের ভোট অনেকটাই কমেছে। এর মধ্যে বিশেষ চিন্তার কারণ আবাসনগুলি। সেখানে বিজেপি গড়ে ৫১ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোট পেলেও তৃণমূলের ঝুলিতে ২৪ থেকে ৩৭ শতাংশ!
তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, আবাসনগুলির বাসিন্দাদের সমর্থন ফিরে পেতে যথাযথ পদক্ষেপ করুন কাউন্সিলাররা। শনিবার কালীঘাটে দলের বৈঠকে তিনি ফিরহাদকে তেমনই নির্দেশ দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। এ প্রসঙ্গে রবিবার ফিরহাদ বলেন, ‘কিছু ওয়ার্ডে আমরা পিছিয়ে পড়েছি ঠিকই, তবে ব্যবধান খুব বেশি নয়। সেটা কেন হলো, তা খুঁজে দেখা হচ্ছে।’
তিনি জানান, বহুতলের পাশাপাশি যেখানে যেখানে তাঁরা ভোট কম পেয়েছেন, সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কাউন্সিলাররা কথা বলবেন। কোথাও পরিষেবা নিয়ে সমস্যা আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানাচ্ছেন দক্ষিণ কলকাতার জেলা তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস কুমার। একদিকে বাসিন্দাদের ক্ষোভ কমানোর জন্য পদেক্ষপ, অন্যদিকে হারানো ওয়ার্ডে সংগঠন মজবুত করার কথাও ওয়ার্ড কমিটিগুলিকে জানিয়েছে দল।
ভবানীপুরের আওতাধীন ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে লোকসভা ভোটে প্রায় ৩,৬০০ ভোটে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। সেখানকার কাউন্সিলার অসীম বসু রবিবার বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে বেশিরভাগই আবাসন। যার অধিকাংশ বাসিন্দা অবাঙালি। কেন তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিলেন, তা জানতে আজ থেকেই আবাসন ধরে ধরে বৈঠক করছি। সমস্যা থাকলে তা সমাধানের রাস্তা বের করা হবে।’
বউবাজার এলাকার টিএমসি কাউন্সিলার বিশ্বরূপ দে-র কথায়, ‘যাঁরা ভোট দিতে এলেন না, তাঁদের বাড়িতে যাব। জানার চেষ্টা করব কোনও ত্রুটি রয়েছে কি না।’ বিজেপি-র কাউন্সিলার সজল ঘোষের অবশ্য বক্তব্য, ‘গ্রামের মানুষকে ছোট না করেই বলছি, শহরের মানুষ রাজ্যের অবস্থাটা বুঝতে পারছেন। সে কারণেই এই ফল।’ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পুরভোট হলে কলকাতার ‘ছোট লালবাড়ি’ বিজেপির দখলেই থাকবে বলে প্রত্যয়ী সজল।