Raniganj Robbery Case,গিরিডির জঙ্গলে উদ্ধার ছিনতাই হওয়া গাড়ি, ধৃত বিহারের যুবক – cid investigation started in raniganj gold shop robbery case


এই সময়, আসানসোল: রানিগঞ্জে রুদ্ধশ্বাস গুলি-পাল্টাগুলির লড়াইয়ের থ্রিলারের পরে অভিযুক্তদের ধরতে তৎপর ছিল পুলিশ। ঘটনার পরই পড়শি দুই রাজ্য—ঝাড়খণ্ড ও বিহার পুলিশকে সতর্ক করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। সেইমতো রবিবার রাতে ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে অভিযান চালিয়ে সেখানকার সরিয়ার জঙ্গল থেকে ব্যাঙ্ককর্মীর ছিনতাই হওয়া গাড়িটি উদ্ধার করে পুলিশ।গাড়িতেই ছিল এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত সুরজ সিং। গ্রেপ্তার করা হয় ওই দুষ্কৃতীকে। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু কার্তুজও। গিরিডির পুলিশ সুপার দীপককুমার শর্মা বলেন, ‘ডাকাতির খবর পেয়ে নাকা চেকিং শুরু হয়। তাতেই একটি গাড়ির পিছু নিয়ে গিরিডির সরিয়ার জঙ্গল থেকে সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। গাড়িতে সুরজ সিং নামে এক যুবক ছিল। তবে ওই যুবকের সঙ্গে থাকা আরও তিন জন পালিয়ে যায়। হাজারিবাগ থেকে ডগ স্কোয়াড এনে জঙ্গল ও তার আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়।’

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত সুরজ আসানসোল ও রানিগঞ্জের দু’টি ডাকাতির ঘটনাতেই যুক্ত। সোমবার সকালে বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা বছর ২৬-এর সুরজকে আসানসোল আদালতে পেশ করে পুলিশ। বিচারক ধৃতের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের সরকারি আইনজীবী মনোজ সিনহা জানিয়েছেন, ধৃত যুবকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, ডাকাতি করার সময়ে আঘাতের চেষ্টা ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং অস্ত্র আইনের ২৫ ও ২৭ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে সোমবার আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস বলেন, ‘একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুরোদমেই তদন্ত চলছে। আমাদের অফিসাররা এখনও ঝাড়খণ্ডের যেখানে ছিনতাই করা গাড়িটি উদ্ধার হয়, সেখানেই রয়েছেন।’ আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের শনাক্তকরণের জন্য টিআই প্যারেড করানো হবে। সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় পৃথক মামলা করায় রানিগঞ্জ থানার পুলিশ ধৃতকে পরে আলাদা করে পুলিশ হেফাজতে নিতে পারে।

এদিকে, রানিগঞ্জের ওই দোকানের মালিক সুদীপ রায় জানান, রবিবার রাতেই কলকাতার ভবানী ভবন থেকে সিআইডি-র একটি দল তদন্তে আসে। তাঁর দোকান থেকে ১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার মতো গয়না ডাকাতি হয়েছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ রানিগঞ্জ শহরের ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের তারবাংলা এলাকায় ওই সোনার দোকানে ৭ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল হানা দেয়। মিনিট পাঁচেক লুটপাট চালিয়ে পালানোর সময়ে ঘটে বিপত্তি।

ওই দোকানের সামনে একটি হার্ডওয়্যারের দোকানে ছিলেন জামুড়িয়া থানার শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি মেঘনাদ মণ্ডল। তিনি জীবন বাজি রেখে, একটি ল্যাম্পপোস্টে কভার নিয়ে ডাকাতদলের দিকে গুলি চালাতে শুরু করেন। একটি গুলি এক ডাকাতের কোমরের কাছে লাগে। ততক্ষণে চলে আসে রানিগঞ্জ থানার পুলিশ। তবে তারই মধ্যে ডাকাতদল সোনার দোকানের সামনে একটি বাইক ফেলে রেখে অন্য দু’টি বাইকে চম্পট দেয়।

Asansol Robbery Case : সাত ডাকাতের সঙ্গে একা লড়াই OC-র!

এদিকে, এই ঘটনার ঘণ্টাখানেক পরে আসানসোলের মহিশীলা কলোনির চক্রবর্তী মোড়ে চার দুষ্কৃতী দুর্গাপুরের বাসিন্দা ব্যাঙ্ককর্মী নয়ন দত্তকে গাড়ি থেকে নামিয়ে গুলি করে তাঁর গাড়ি ছিনতাই করে পালায়। সব কিছু দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে আসানসোলের এই ঘটনার সঙ্গে রানিগঞ্জের ডাকাতদল জড়িত। এর পর জেলার পাশাপাশি সংলগ্ন বিহার-ঝাড়খণ্ডের সব থানাকে অ্যালার্ট করা হয়।

সেই খবর পেয়ে প্রথমে ধানবাদের তোপচাঁচি পুলিশ ছিনতাই হওয়া গাড়িটি ধরার চেষ্টা করে। তারা গাড়িটি ধরতে পারেনি। পরে গিরিডি পুলিশের টিম তল্লাশি শুরু করে। ডুমড়ি টোলপ্লাজ়ার কাছে গাড়িটি ধরার চেষ্টা করা হয়। তবে সেখানে একটি গেট ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে সরিয়া বাজারের দিকে ওই গাড়িটি চলে যায়। শেষ পর্যন্ত সরিয়া কয়রাডি এলাকায় জঙ্গলে পাওয়া যায় গাড়িটি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *