এই সময়, সোনারপুর: অবশেষে পুলিশের জালে জামাল সর্দার। গোপন সূত্রে জামালের খোঁজ পেয়ে শুক্রবার রাতে সোনারপুর ও চন্দনেশ্বর থানার সীমানা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, ‘শনিবার জামালকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হবে। জামালকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করবেন তদন্তকারীরা।’ উল্লেখ্য, বিচারের নামে গ্রামেরই এক মহিলার পা শিকল দিয়ে বেঁধে মারধরের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল জামাল। লাগাতার তল্লাশি অভিযান শেষে চার দিনের মাথায় সে ধরা পড়ল। বাড়িতে কচ্ছপ রাখার অপরাধে বন দপ্তরও জামালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।শুক্রবারও সোনারপুরের প্রতাপনগরে জামালের প্রাসাদোপম বাড়ি ছিল তালাবন্ধ। এ দিকে জামালের বিরুদ্ধে একের পর এক লোকে মুখ খুলতে শুরু করেছে। শুক্রবার তার ভাই কামাল সর্দারের অভিযোগ, দাদা তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে জেল খাটিয়েছিল। জামাল টাকা কামাতে নিজের আত্মীয়স্বজনকেও বাদ দেয়নি বলে অভিযোগ। জামাল যে পাক্কা ‘জালিয়াত’ এখন সে কথা শোনা যাচ্ছে কামালের গলায়।

এ দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে বিস্ফোরক কামাল বলেন, ‘২০২০ সালে গ্রামে একটি মারামারির ঘটনায় বেশ কয়েক জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। জামাল সকলকে বলে ৫০ জনের নামে মামলা হয়েছে। ছাড়ানোর জন্য টাকা প্রয়োজন। সেই মতো আমরা টাকা দিয়েছিলাম। পরে জানা যায় মাত্র ৭-৮ জনকে পুলিশ ধরেছিল। বাকি টাকা ও আত্মসাৎ করেছিল।’ তা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন কামাল। তার মূল্যও চোকাতে হয়েছিল।

কামালের কথায়, ‘বৌদিকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে জামাল ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে থানায়। পুলিশ আমায় গ্রেপ্তার করে। মিথ্যে মামলায় ২৭ দিন জেল খাটতে হয়েছিল আমাকে।’ কামালও চাইছিলেন দ্রুত ধরা পড়ুক জামাল।

বাড়িতে বিচারসভা বসিয়ে মহিলাকে মারধরের বিষয়টি ১৫ জুলাই জানাজানি হতে পরের দিন সকালে নিজের বাড়িতে বসে জামাল সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিল, সব মিথ্যে। জামালের মার্বেলে মোড়া বৈঠকখানায় শিকল দেখে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের প্রশ্নের মুখে জামালের স্ত্রী দাবি করেছিলেন, গোরু-ঘোড়া বাঁধতেই ওই শিকল। যদিও তা মানতে চাননি গ্রামবাসীরা। বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় হইচই শুরু হওয়ায় তার পরের দিনই চম্পট দেয় সে। সঙ্গে পরিবারকেও নিয়ে যায়। তারপর থেকে জামালের মোবাইল বন্ধই ছিল।

জামালের বাড়ির সুইমিং পুলে একটি কচ্ছপ রয়েছে। সেটি ইন্ডিয়ান শফট শিল্ড টার্টেল বলে বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। যা বাড়িতে রাখা আইনত দণ্ডনীয়। বন দপ্তরও জামালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version