এই সময়, বকখালি ও শিলিগুড়ি: রবিবার কলকাতার ধর্মতলায় ছিল তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ। সে দিনই বিকেলে বকখালির সমুদ্র সৈকত থেকে রঞ্জিত মণ্ডলের (৫২) দেহ উদ্ধার হয়। শিলিগুড়ির ভক্তিনগরের বাসিন্দা রঞ্জিত ১৮ জুলাই সহকর্মীদের সঙ্গে শহিদ সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে বের হন। কিন্তু কেন তিনি সমাবেশে না থেকে বকখালি চলে গেলেন তা নিয়ে ধন্ধে পরিবার।এই মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা বলে মানতে নারাজ পরিবারের লোকজন। রঞ্জিত মণ্ডল ছিলেন নিউ জলপাইগুড়ির ইন্ডিয়ান অয়েলের শ্রমিক। সেই সুবাদে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা ছিলেন। শিলিগুড়ি পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন। বাড়িতে স্ত্রী, দুই ছেলে ছাড়াও বৃদ্ধ বাবা রয়েছেন। ১৮ জুলাই দলের সহকর্মীদের সঙ্গে কলকাতায় যাবেন বলে রওনা হন। ১৯ জুলাই দার্জিলিং মেলে কলকাতায় আসেন। তারপর সভাস্থল বুড়িছোঁয়া ছুয়েই সহকর্মীদের সঙ্গে বকখালি চলে যান।

বিকেলে বকখালির সমুদ্রে স্নান করতে নেমেছিলেন রঞ্জিতরা। খানিক বাদে তাঁর সঙ্গীরা জল থেকে উঠে এসে বলেন রঞ্জিত তলিয়ে গিয়েছেন। পরে সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা সমুদ্র সৈকত থেকে অচেতন অবস্থায় রঞ্জিতকে উদ্ধার করেন। ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার পুলিশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

রবিবার রাতেই পুলিশ ফোন করে রঞ্জিতের শিলিগুড়ির বাড়িতে খবর পাঠায়। সোমবার রঞ্জিতের ছেলে শুভম মণ্ডল পরিবারের লোকজনকে নিয়ে কাকদীপ মহকুমা হাসপাতালে চলে আসেন। সোমবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয় কাকদ্বীপ হাসপাতালের মর্গে। তবে রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।

সমুদ্রের ঢেউ সামলাতে না পেরে বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে মানতে নারাজ শুভম। পরিবারের বক্তব্য, যাঁদের সঙ্গে রঞ্জিত শহিদ সমাবেশে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না। পরিবারের লোকজন তাই আপত্তিও জানিয়েছিলেন। কিন্তু শোনেননি রঞ্জিত।

এ দিন মর্গের বাইরে দাঁড়িয়ে শুভম বলেন, ‘প্রত্যেক বছর বাবা একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে কলকাতায় আসতেন। কিন্তু এ বার সভায় না থেকে বকখালি চলে এসেছিলেন। বাবার বন্ধুদের থেকে শুনলাম সমুদ্রে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছিলেন। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসুক। তারপর ঠিক করব পরবর্তী পদক্ষেপ।’

রঞ্জিতের মৃত্যুর মধ্যে কোনও রহস্য দেখতে রাজি নন তৃণমূলের নেতারা। শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন কাউন্সিলার জয়দীপ নন্দী বলেন, ‘রঞ্জিত জলে ডুবেই মারা গিয়েছেন। পরিবারের লোকজন যেটা বলছেন, তা ঠিক নয় বলেই আমার ধারণা। পুলিশ তদন্ত করুক। তা হলেই সব স্পষ্ট হবে।’ তৃণমূলের শিলিগুড়ি টাউন আইএনটিটিইউসির সভাপতি সুজয় সরকারও রঞ্জিতের মৃত্যুর খবর পেয়ে কাকদ্বীপে চলে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘নিম্নচাপ এবং কোটালের জেরে সমুদ্রের জলস্তর বেড়েছিল। উত্তাল ঢেউয়ে রঞ্জিত তলিয়ে যান।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version