ফের সিঙ্গুরে আন্দোলনের প্রস্তুতি? আন্দোলনের আঁতুর ঘরে তৈরি হল ‘সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটি’। কমিটির সদস্যদের দাবি, সিঙ্গুরের অধিকাংশ জমি চাষযোগ্য করে দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের জমি চাষযোগ্য করে দিক সরকার, তা না হলে সেখানে শিল্প স্থাপন করা হোক। আগামী ৩০শে অগস্ট থেকে ক্যাম্প করে চাষিদের থেকে এই মর্মে আবেদন পত্র সংগ্ৰহ করবে কমিটি। যদিও, মন্ত্রী বেচারাম মান্না জানিয়েছেন, ৯০ শতাংশ জমিই চাষযোগ্য করে দেওয়া হয়েছে।২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটা মোটর গাড়ি কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে কৃষিজমি বাঁচাও আন্দোলন। সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ি, বাজেমেলিয়া, খাসেরভেড়ি, সিংহের ভেড়ি, গোপালনগর এই পাঁচটি মৌজার হাজার হাজার চাষি আন্দোলনে যুক্ত হয়ে জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেন। রাজ্যের বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস আন্দোলনের রাশ ধরে নিতে সক্ষম হয়। ফলে আন্দোলন তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হয়ে ওঠে। কৃষকদের আন্দোলনের ফলে কারখানার কাজ প্রায় সমাপ্ত হয়েও ফিরে যেতে বাধ্য হয় টাটারা। ২০১৬ সালে ৩১শে অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করে প্রায় ১০০০ একর জমি চাষযোগ্য করে তিন মাসের মধ্যে চাষিদের ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।

এরপর কারখানা ভেঙে সিঙ্গুরের জমি চাষিদের ফিরিয়ে দেয় তৃণমূল সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রায় ৮ বছর পরে আবারও সেই জমি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলছেন সিঙ্গুরের আন্দোলনকারী কৃষকদেরই একাংশ। একদা জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা তথা ‘সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটি’র অন্যতম সদস্য দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘প্রথম দাবি হচ্ছে জমির সীমানা নির্ধারণ করে তা চাষিদের ফিরিয়ে দেওয়া, জল নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত করা, জমি ফেরত পেলেও মিউটেশন বা কনভারসেশনের অধিকার চাষিদের নেই, সেই অধিকার চাষিদের দিতে হবে। যে জমিগুলোতে অনেক চেষ্টা করেও চাষযোগ্য করা যাবে না সরকার কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে সেই জায়গায় শিল্প স্থাপন হোক।’ তাঁদের দাবি, সিঙ্গুরের জমি পুনর্ব্যবহার করতে চাইছেন তাঁরা। জমি বন্ধ্যা রাখতে চাইছে না‌ । হয় সিঙ্গুরের জমিতে চাষ হোক না হলে শিল্প হোক। যে জমি তিন মাসের মধ্যে চাষ যোগ্য করে দেওয়ার কথা সেই জমি আট বছরেও চাষযোগ্য হয়নি বলে দাবি তাঁদের।

Nabanna Abhijan: নবান্ন অভিযানের আগেই গ্রেপ্তার অস্ত্র-সহ ৫ দুষ্কৃতী
সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘আন্দোলন করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। যে কেউ আন্দোলন করতে পারে। তবে সেই আন্দোলনের কতটা যৌক্তিকতা আছে, কতটা মানুষের স্বার্থ আছে সেটা দেখা দরকার। যে ইস্যু নিয়ে কথা হচ্ছে সেটা সিঙ্গুরের মানুষ শুনবে না। কারণ ৯০ শতাংশ জমি চাষযোগ্য হয়ে গিয়েছে।’ অন্যদিকে, সিপিএম হুগলি জেলা কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘৯০ শতাংশ জমি চাষযোগ্য হয়েছে বলে মন্ত্রী যা বলছেন তা মিথ্যা কথা। উনি কোন ভিত্তিতে বলছেন জানি না। জনগণ, কৃষক, আধিকারিকদের ডেকে পর্যবেক্ষণ হলেই বিষয়টা বোঝা যাবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version