একসঙ্গে শহরের এতো রাস্তা কেন বন্ধ? ঘেঁটে গিয়ে নিজেই প্রশ্ন শুরু করল গুগল। মঙ্গলবার দুপুর-বিকেলে কলকাতা শহরের গুগল ম্যাপে ফুটে উঠেছিল রাস্তা বন্ধের সাইনেজ। এক-দুই নয়, বহু রাস্তার উপরে ফুটে ওঠে সেই সাইনেজ। আর তাতেই ঘেঁটে যায় গুগল। এক একটি রাস্তার ছবি দিয়ে তাদেরই ম্যাপস-এ প্রশ্ন করতে শুরু করে গুগল, এই রাস্তা কি এখন বন্ধ?মূলত ২০১৬ থেকে শহরের রাস্তার ট্র্যাফিকের হাল-হকিকত জানাতে শুরু করে গুগল, জানাচ্ছেন গুগলের লোকাল গাইড হিসেবে কাজ করা শৌনক দাস। ততদিনে কলকাতা থেকে উধাও বনধ-কালচার। ফলে, একদিনে একসঙ্গে এতো রাস্তা বন্ধের সঙ্গে পরিচিত নয় গুগল।
মূলত স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (এআই)-এর সাহায্যে শহরের কোন রাস্তায় কত গাড়ি রয়েছে, গুগল তার হদিস দেয়। রাস্তায় কম গাড়ি থাকলে সবুজ রঙ, তার চেয়ে একটু বেশি থাকলে কমলা এবং বেশি গাড়ি থাকলে লাল রঙ ফুটে ওঠে গুগল ম্যাপে। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা যত বাড়ে সেই লাল আরও গাঢ় হতে হতে খয়েরি রঙ ধারণ করে।
শৌনকের কথায়, ‘এ সবই গাড়ির মুভমেন্টের উপরে ভিত্তি করে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি এবং এআই-এর মাধ্যমে করা হয়। কিন্তু, মঙ্গলবার থেকে শহরের ওই সব এলাকা থেকে গাড়ি উধাও। ফলে, ঘেঁটে যায় গুগল। বুঝতে পারে না ঠিক কী হচ্ছে।’ তাই শহরের সমস্ত বন্ধ রাস্তার উপরে আলোর বিন্দুর মতো একে একে ফুটে উঠতে থাকে মাঝে সাদা লাইন টানা লাল বৃত্ত।
কলকাতা শহরের আনাচ-কানাচে শৌনকের মতো অনেকেই লোকাল গাইডের কাজ করেন। তাঁরা ছড়িয়ে রয়েছেন, গ্রামে-গঞ্জে, দেশের সর্বত্র। বিনি পয়সায় গুগল ম্যাপে বিভিন্ন বিষয় আপলোড করার কাজ করেন তাঁরা। শৌনকের কথায়, ‘আগে থেকে কোথাও কোনও রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হলে সেটা গুগলে আপলোড করা হয় না। কারণ, সেটা যে আদৌ বন্ধ থাকবে এমন স্থিরতা থাকে না।’ আজ, বুধবার বিজেপি বনধ ডেকেছে। শৌনকের দাবি, কোন রাস্তা বন্ধ থাকবে সেটা আগে থেকে বলা মুশকিল। তিনি বলেন, ‘কেবলমাত্র যখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটে এবং সেই কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, পথচলতি মানুষের সুবিধার্থে সেটা আপলোড করা হয়।’ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশও নাকি এ বিষয়ে গুগলকে সাহায্য করে।
উদাহরণ দিয়ে শৌণক জানান, ২০১৮-র ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরে ওই রাস্তা যে দীর্ঘ দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল, তা তাঁরা গুগলে আপলোড করে দেন। কিন্তু, মঙ্গলবারে নবান্ন অভিযানের নিরিখে ঠিক কী যে হতে চলেছে, সেটা আগাম আন্দাজ করা যায়নি। সকালের পর থেকে একের পর রাস্তা বন্ধ হতে থাকে। তা দেখেই চমকে ওঠে গুগল। সন্ধে গড়াতেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে গুগল-ছবি।