এই সময়: টেন্ডার যাতে ‘গ্যাংস অফ থ্রি’য়ের মধ্যেই থাকে সে জন্য আরজি করের দুর্নীতির ঘটনায় ধৃত সুমন হাজরা, বিপ্লব সিংহরা আত্মীয়দের নামে একাধিক ভুয়ো সংস্থা খুলেছিলেন। এই পরিকল্পনার নেপথ্যে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের হাতযশ ছিল বলে মনে করছে সিবিআই।কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ধারণা, এভাবেই লক্ষ-লক্ষ টাকা ঘরে তুলেছেন সন্দীপ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠরা। ওই তিনজনের বাইরে আরও কয়েকজন এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত বলেও মঙ্গলবার আদালতে দাবি করেছে সিবিআই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নথি সংগ্রহের কাজ চলছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।

তদন্তে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে থাকার সময়ে সন্দীপের সঙ্গে পরিচয় হয় ভেন্ডর বিপ্লবের। পরবর্তীতে তাঁর মাধ্যমেই সুমনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে সন্দীপের। তিনি যখন যেখানে বদলি হতেন, সেখানেই তখন কাজের বরাত পেত সুমন, বিপ্লবের সংস্থা। আলিপুর আদালতে ওই তিনজনের যোগাযোগের নথি মঙ্গলবার পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সরকারের থেকে অ্যাকাডেমিক ফান্ডের যে সব টাকা হাসপাতালের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল, সে সব দিয়েও ঠিকাদারদের বিল মিটিয়েছেন সন্দীপ। সরকারি অডিটকে উপেক্ষা করেই দিনের পর দিন চলেছে এসব কারবার। আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি এই বিষয়টি নিয়ে বছরখানেক আগেই সরব হয়েছিলেন।

এমনকী, তাপস চন্দ্র পাল নামে আরও একজন ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যভবনে। তবে কোনও ক্ষেত্রেই লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। সিবিআই জানতে পেরেছে, করোনার সময়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে টাকা পেয়েছিল, তার একটা বড় অংশ নিজের বসার ঘর সাজানোর জন্য খরচ করেছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ। আখতার আলি বুধবার বলেন,‘সঠিক পথে তদন্ত এগোলে অনেক তথ্য সামনে আসবে।’

CBI: আরজি করে দুর্নীতির মামলায় তৎপর সিবিআই, সন্দীপ ছাড়াও গ্রেপ্তার আরও ৩

চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে হাসপাতালের পার্কিং নিয়েও যে দুর্নীতি হয়েছে, তার সব ক্ষেত্রে কমিশন সন্দীপের কাছে গিয়েছে বলেও তথ্য সংগ্রহ করেছে সিবিআই। হাসপাতালের ওষুধ থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ করে ঘুষ আদায় করা হয়েছে বলেও সিবিআইয়ের দাবি। আর সমস্ত দুর্নীতিতে সন্দীপকে সাহায্য করেছেন বিপ্লব এবং সুমন।

অন্যদিকে, সন্দীপকে ঘিরে যাতে নতুন করে বিক্ষোভ না হয় সেজন্য এদিন নিজাম প্যালেসেই তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। বুধবার বেলা বারোটা নাগাদ বিআর সিং হাসপাতাল থেকে ৩ জন চিকিৎসককে ডাকা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ কাজ সেরে বেরিয়ে যান তাঁরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version