Arambagh News,শিশুকন্যাকে ধর্ষণ-খুনে ফাঁসির সাজা তান্ত্রিকের স্ত্রীর, যাবজ্জীবন দিদার – arambagh court sentenced accused to death on crime with a minor


এই সময়, আরামবাগ: মেয়ের রোগমুক্তি চেয়ে তান্ত্রিকের পরামর্শে নরবলির জন্যে নিজের নাতনিকে নিয়ে গিয়েছিল দিদিমা। তান্ত্রিক বছর চারেকের মেয়েটিকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তার পর শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে তান্ত্রিকের স্ত্রী ও নিজের দিদিমা। প্রমাণ লোপাটে দেহ ফেলে দেওয়া হয় সেপটিক ট্যাঙ্কে। অভিযুক্ত তান্ত্রিক মামলা চলতে চলতেই জেল হেফাজতে মারা যায়। ছ’বছর আগের মামলায় অবশেষে মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা হলো বাকি দুই অভিযুক্তের।বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ বিবেচনায় আরামবাগের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক তান্ত্রিকের স্ত্রীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছেন। কোনও মহিলার ফাঁসির সাজাও কিছুটা বিরল বলেই মত আইনজীবীদের। আর শিশুটির দিদিমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক কিষানকুমার আগরওয়াল। দু’জনের ক্ষেত্রেই ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানার রায়ও হয়েছে। সেই সঙ্গেই ভিক্টিম কনপেনসেশন স্কিম অনুযায়ী মৃত শিশুকন্যার পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আদালত সূত্রে খবর, ঘটনা ২০১৮ সালের। খানাকুলের রাধাবল্লভপুর গ্রামের। সুশীলা মাঝির এক মেয়ে রোগে ভুগছিল। এলাকার এক তান্ত্রিক মুরারি পণ্ডিতের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। ওই তান্ত্রিক সুশীলাকে প্রস্তাব দেয়, যদি কোনও শিশুকে নরবলি দেওয়া হয় তা হলে তার মেয়ের রোগমুক্তি ঘটবে৷

সুশীলা নিজের ৪ বছরের নাতনিকেই তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যায়। তন্ত্রসাধনার নামে ওই শিশুকন্যার হাত বেঁধে এবং মুখে কাপড় বেঁধে ধর্ষণ করে মুরারি। এর পর শিশুটিকে খুন করে তার দিদিমা সুশীলা ও তান্ত্রিকের স্ত্রী সাগরিকা পণ্ডিত। পাশের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে দেহ ফেলে দেওয়া হয়।

ধর্ষণের পরে হাতুড়ি মেরে খুন, দেড় বছর পরে মৃত্যুদণ্ড সেই পড়শির
মেয়েকে দীর্ঘক্ষণ দেখতে না পেয়ে শিশুটির মা ও পরিবারের অন্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও না পেয়ে খানাকুল থানায় অভিযোগ জানান। নিখোঁজ ডায়েরি হয়। তদন্তের দায়িত্ব নেন খানাকুল থানার অফিসার বুদ্ধদেব সরকার। কয়েক দিন পর তদন্তকারীরা ওই শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে। পুলিশ সুশীলা, সাগরিকা ও মুরারি পণ্ডিতকে গ্রেপ্তার করে। গত ২ ফেব্রুয়ারি জেল হেফাজতে থাকাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় মূল অভিযুক্ত মুরারি।

মঙ্গলবার সাগরিকার ফাঁসি ও সুশীলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা হয়। সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় বলেন, ‘পুলিশ চার্জশিট দেওয়ার পরে অভিযুক্তরা হাইকোর্টেও গিয়েছিল, কিন্তু জামিন পায়নি। বিচারক সাক্ষীদের বক্তব্য শুনে এবং তথ্যপ্রমাণ দেখেই রায় দিয়েছেন।’

অন্য দিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী অরূপরতন হাজরা বলেন, ‘একটা বাচ্চা মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছিল না ৫-৬ দিন ধরে৷ পরে পাওয়া যায় সেপটিক ট্যাঙ্কে। লোকেদের সন্দেহ হয়, পুজো করে হয়তো মারা হয়েছে। আমার মক্কেলরা নির্দোষ। এই রায় আমরা মানতে পারছি না। উচ্চ আদালতে যাব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *