শনিবার অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষা থেকে ইঙ্গিত, বিধানসভা ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীরে। মঙ্গলবার যদি সত্যিই এ রকম হয়, তা হলে সরকার গড়ার চাবিকাঠি ওই পাঁচ জনের হাতে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শেই জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ওই পাঁচ জনকে বিধানসভার সদস্য হিসেবে মনোনীত করেন। সে ক্ষেত্রে ওই পাঁচ জনের ভোট কেন্দ্রের শাসক দল বা তাদের জোটের পক্ষে পড়ার সম্ভাবনা— এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
যে কারণে জম্মু ও কাশ্মীরের নতুন বিধানসভা গঠনের আগেই ওই পাঁচ জনকে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের মনোনয়ন করার বিষয়টিকে গণতন্ত্রের উপর আঘাত হিসেবে দেখছে কংগ্রেস। একাধিক সূত্রের খবর অনুযায়ী, লেফটেন্যান্ট গভর্নর ওই পাঁচ জনকে বিধানসভার সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছেন। কংগ্রেস নেতা রবিন্দর শর্মার বক্তব্য, ‘নতুন সরকার গঠনের আগেই এহেন পদক্ষেপ সংবিধানের মৌলিক নীতি ও জনাদেশের উপর আঘাত।’
জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট হলো এক দশক পর। তবে ১৯৫২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীর ছিল রাজ্য, ২০১৯ থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। ২০১৯-এর জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনে বলা হয়, লেফটেন্যান্ট গভর্নর দু’জন মহিলাকে বিধানসভার সদস্য হিসেবে মনোনয়ন করতে পারেন, যদি তিনি মনে করেন, বিধানসভায় মহিলাদের যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব নেই। আবার ২০২৩-এ ওই আইনের একটি সংশোধনী আরও তিন জনকে বিধানসভার সদস্য হিসেবে মনোনয়নের সুযোগ দিয়েছে।
তাঁদের দু’জনকে বেছে নেওয়া হবে কাশ্মীরি অভিবাসীদের মধ্যে থেকে, আর এক জন হবেন পাক-অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের ছিন্নমূল মানুষদের প্রতিনিধি। বিধানসভার এই পাঁচ মনোনীত সদস্য ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন কি না, সরকার গড়ার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন কি না, এই ব্যাপারে আইনে কিছু বলা নেই।
তবে জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা অনুসরণ করছে পুদুচেরি বিধানসভার মডেলকে। পুদুচেরি বিধানসভার মনোনীত সদস্যদের সঙ্গে নির্বাচিত সদস্যদের কোনও ফারাক নেই এবং মনোনীত সদস্যদেরও সেখানে ভোটাধিকার রয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় ৯০টি আসন, সরকার গঠনের ম্যাজিক ফিগার ৪৬। তবে মনোনীত পাঁচ বিধায়ককে ধরলে বিধানসভার সদস্য সংখ্যা হবে ৯৫ এবং সে ক্ষেত্রে সরকার গঠন করতে প্রয়োজন ৪৮টি আসনের। সব মিলিয়ে, কাল রেজ়াল্ট বেরোনোর আগেই ৫ সংখ্যাটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে গেল উপত্যকায়।