প্রবীর চক্রবর্তী: ‘To let’-এর বিজ্ঞাপন আপনাদের চোখে পড়ে প্রায়ই। বাড়ি ভাড়া দেওয়ার জন্য এই নোটিস বাড়ির বাইরে ঝোলান অনেকেই। আবার, রেঁস্তোরা বা অন্য অনেক জায়গায় আপনারা দেখেছেন ‘No Outside Food Allowed‘ অর্থাত্ ‘এখানে বাইরের খাবার নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ’। কিন্তু কলকাতা শহরে এরকম কোনও বাড়িতে গিয়েছেন বা চোখে পড়েছে এরকম বাড়ি যেখানে ঢোকার মুখে সদর দরজায় লেখা বাইরের খাবার নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। কোনও মেসবাড়ি নয়, কোন মন্দির নয়, কোন হাসপাতাল, রেস্তোরা মায় কোন বৃদ্ধাশ্রমও নয়। অথচ, দক্ষিণ কলকাতার খাস লেকগার্ডেন্সের একটি বাড়িতে এরকমই লেখা একটি বোর্ডে। কী রহস্য? কেউ কারও সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে গেলেও তো বাঙালি সংস্কৃতিতে মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার চল আছে। কিন্তু তা-ও নিষিদ্ধ?
দক্ষিণ কলকাতার লেকগার্ডেন্সের একটি বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় এরকমই একটা নোটিসে অনেকেরই চোখ আটকে যাচ্ছে। স্বভাবতই অনুসন্ধিত্সু মন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পথচারীরা। কে থাকে এই বাড়িতে? মালিক কে? কেনই বা এরকম লেখা? এক ঝটকায় এই প্রশ্নগুলো মাথায় খেলে যাচ্ছে সবার। তাহলে কী রহস্য? এটা কি কোনও প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের বাড়ি? পথচলতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এরকম করেছেন না কি কোন ঘটনা ঘটেছে?
একটু খোঁজখবর নিয়ে জানা গেল, বাড়ির মালিক ভীষন খাদ্যরসিক। বিশেষত,রেঁস্তোরার খাবার পেলেই কব্জি ডুবিয়ে খান। বাইরের আহারে তিনি সংযম রাখতে পারেন না। আর এই খাবার খেয়েই তিনি প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন লোকজন তাঁর কাছে আসে বিভিন্ন কাজে। সেখানে কুশল বিনিময়ের সময় ভালোমন্দ আহার চলতেই থাকে। আর তাতেই পেটবাবাজি বেগড়বাই করেন। শরীর খারাপ হয় আর সুস্থ শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। বর্ষীয়ান এই বাড়ির মালিক আর কেউ নন, তৃণমূলের দমদমের সাংসদ,৭৮ বছর বয়সী রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন অধ্যাপক সৌগত রায় (Sougata Roy)। তাঁর বাড়ির বাইরে শুভান্যুধ্যায়ীরা এরকম একটি নোটিস ঝোলাতে বাধ্য হয়েছেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদের শরীরের কথা মাথায় রেখে। সাংসদ হওয়ায় তাঁকে প্রায়ই দিল্লি ছুটতে হয়। সেখানেও তাঁর খাওয়া দাওয়া পরিমিত।
স্ত্রী বিয়োগের পর তার শরীর ও মন দুই-ই ভেঙেছে। তাই এই সময় রাজনীতির স্বার্থে তাঁর শরীর ঠিক রাখা খুব জরুরি।
প্রবীণ এই নেতা কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের মোদি সরকারের তীব্র বিরোধিতা করেন। সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার পর, এমনিতেই ভারতে বিরোধীদের নিশানায় ট্রাম্প। একাধিক ইস্যুতে উঠেছে প্রশ্ন। যখন সারাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ, ঠিক তখনই গোটা প্রত্যাঘাতের বিষয় নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেছেন, ‘কোনও যুদ্ধই হয়নি। ব্যাপারটা প্রায় হাস্যকর হয়েছে। ড্রোন এদিক থেকে ওদিকে গিয়েছে। দু-একটা মিসাইল এদিক থেকে ওদিকে গিয়েছে। কোনও মেজর তফাৎ হয়নি। কোথায় জঙ্গিঘাটি ধ্বংস হয়েছে? তার প্রমাণ কেন্দ্রীয় সরকার রাখুক না মানুষের সামনে।আমি তো দেখছি ছবিতে, ওই একটা দুটো মাসুদ আজাহারের যে জায়গা, পুরনো ভাঙা বাড়ি, একে জঙ্গিঘাটি ধ্বংস করা বলে? পাকিস্তানের কোন অস্ত্র আমরা ধ্বংস করতে পেরেছি। সেই প্রমাণগুলি দিন না। নের্তৃত্ব তো কিছু দেখাতেই পারল না। পাকিস্তানের মতো দেশকে একটা শিক্ষা দেওয়া গেল না। ‘
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
