Kolkata Metro : জোকা-তারাতলা মেট্রো : চড়বেন তো, হাঁটবেন কোথায়? – joka taratla metro launching arise questions about the pedestrian walkways of metro passengers


দেবাশিস দাস
জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত মেট্রোর উদ্বোধনের তোড়জোড় না হয় তুঙ্গে। কিন্তু স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাত্রীরা যাবেন কোথায়! ডায়মন্ড হারবার রোডের দু’দিকের ফুটপাথই যে চলে গিয়েছে হকারদের কব্জায়! সেখানে পাশাপাশি একজনের বেশি দু’জনের চলার জো নেই। অগত্যা ঝুঁকি নিয়ে ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর দিয়েই যাতায়াত করেন পথচারীরা। বিষফোড়ার মতো থেকে থেকেই রাস্তার ধারে ট্যাক্সি, অটো, ম্যাটাডরের স্ট্যান্ড। বাস বা অটো রাস্তা যেখানে-সেখানে যাত্রী তোলে বা নামায়। ফলে এমনিতেই বিভীষিকাময় ডায়মন্ড হারবার রোডে এখন মেট্রোর যাত্রীদের নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তা জাঁকিয়ে বসেছে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাত্রীরা ফুটপাথ ব্যবহার করতে পারবেন না, সে কথা বলা যায়। তাঁদের সরাসরি নেমে আসতে হবে রাস্তায়। অর্থাৎ, সেখানে চাপ বাড়বে নতুন করে।

Kolkata Metro: শীঘ্রই শুরু হবে জোকা-তারাতলা মেট্রো, দেখে নিন ভাড়ার তালিকা
জোকা থেকে তারাতলা, এই সাড়ে ছ’কিলোমিটার রাস্তাজুড়েই ফুটপাথ বেদখল হয়ে গিয়েছে। অথচ, জোকা মেট্রো স্টেশনের পাশে ইএসআই হাসপাতাল। দিনভর লোকের আনাগোনা। অথচ, ফুটপাথ জুড়ে দোকানপাট। পথচারীরা বেশিরভাগ সময়েই রাস্তায়, সুযোগ পেলে টুক করে ফুটপাথে উঠছেন। ঠাকুরপুকুর স্টেশন চত্বরেও এক ছবি। ঠাকুরপুকুর, কদমতলা, পঞ্চাননতলা, পোড়া অশ্বত্থতলার মতো লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা এই স্টেশনই ব্যবহার করবেন। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, মেট্রো চালুর দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই ফুটপাথে বেড়ে চলেছে দখলদারি।

East West Metro : শিয়ালদা থেকে সল্টলেক যাত্রা আরও সহজ, ইস্ট-ওয়েস্ট রুটে বাড়ছে মেট্রো
ঠাকুরপুকুরের পরে সখেরবাজার। এখান থেকে অটো বা বাসে টালিগঞ্জে মেট্রো ধরতে যাওয়ার ভিড় দীর্ঘদিনের। কারণ মেট্রোয় করে কলকাতা দিয়ে এসপ্ল্যানেড বা দমদমের দিকে যেতে হলে এখান থেকে টালিগঞ্জই নিকটতম স্টেশন। ফলে দিনভর ভিড় লেগে থাকে এখানে। বেহালার উদয়ন পল্লি, ভট্টাচার্যপাড়া, শীলপাড়া, ঠাকুরপুকুরের একাংশের বাসিন্দারা এখান দিয়েই টালিগঞ্জ যাতায়াত করেন। সখেরবাজারে ফুটপাথ তো বটেই, কিছু দোকান ফুটপাথ থেকে রাস্তায় পর্যন্ত নেমে এসেছে! বেহালার সবথেকে ব্যস্ত এলাকা হলো চৌরাস্তা। একপাশে বড়িশা হাইস্কুল, বিবেকানন্দ মহিলা কলেজ, বেহালা শিল্পতালুক। এই মোড় দিয়েই বীরেন রায় রোড (পশ্চিম), সরশুনা, শকুন্তলা পার্ক, বজবজ, মহেশতলার বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। কিন্তু চৌরাস্তা মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে ফুটপাথের সন্ধান পেতে কালঘাম বেরিয়ে যেতে পারে যাত্রীদের। ফুটপাথে দোকানের সারি, আর রাস্তায় দিনভর অটো, ট্যাক্সি, ম্যাটাডরের দীর্ঘ লাইন।

Jalpaiguri Town Station : ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি সহ একাধিক দাবি, বিক্ষোভ জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে
চৌরাস্তার পরেই বেহালা বাজার। বেহালার সবথেকে জনবহুল এলাকা। বাজার, পুরসভার অফিস, বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসাপাতাল, চোদ্দ নম্বর বাসস্ট্যান্ড, ব্রাহ্ম সমাজ রোড- সবই এর চারপাশে। সকাল থেকে রাত লেগে থাকে অগণিত মানুষের ভিড়। কিন্তু ফুটপাথে সূর্যের আলোটুকু ঢুকতে পারে না। প্লাস্টিক বা বেড়ার অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে অবাধে চলছে দোকানদারি। ফুটপাথের দোকানের মাঝে একচিলতে জায়গা দিয়ে গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে যাতায়াত জনতার। এর উপরে মেট্রো চালু হলে কী হবে, ভেবেই আশঙ্কায় এলাকাবাসী। নির্মাণ সামগ্রী, বাস গুমটি, ছাউনি দিয়ে দোকান, গাছের নার্সারি, প্যারিস ও মাটি দিয়ে রাজস্থানি নকশা করা জিনিসের সম্ভার নিয়ে বসা দোকান – বেহালা চৌরাস্তা থেকে বেহালা বাজার হয়ে তারাতলা পর্যন্ত ফুটপাথে কী নেই! তারাতলা মেট্রো স্টেশনের চারপাশেও রয়েছে দেদার দখলদারি। আরকেডিয়ার, পাঠকপাড়া, অজন্তা, পর্ণশ্রী, ছাতাপার্ক-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা এই অংশ দিয়ে যাতায়াত করেন।

Habra To Kalyani Bus Route : এক বাসে হাবড়া থেকে কল্যাণী, নয়া রুটের টাইম টেবিল জানুন
সরশুনার বাসিন্দা, পেশায় অধ্যাপক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘বছরের পর বছর বেহালার ফুটপাথ নিয়ে এই সমস্যা রয়ে গিয়েছে। মেট্রো চালু হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। কিন্তু প্রতিবাদ করবে কে! বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার যে কেউ নেই, সেটা আমরা বুঝে গিয়েছি।’ ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কের বাসিন্দা সুজয় বসু বলেন, ‘বেহালার ফুটপাথ বরাবর বেহালই থাকে। তাই এই নিয়ে বাক্যব্যয়ে কোনও লাভ নেই। পথচারীরা বেহালায় কোনও দিনই গুরুত্ব পাননি।’

SBSTC Bus : পশ্চিম মেদিনীপুরে দুর্ঘটনার কবলে সরকারি বাস, জখম ১০ যাত্রী
লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘ফুটপাথে হকার নিয়ে সমস্যার নিরসনে কেউ সাহায্য চাইলে তা দিয়ে থাকি। কিন্তু কেউ সহায্য না-চাইলে আমাদের কিছু করার থাকে না।’ বেহালার বাসিন্দা, কলকাতা পুরসভার সড়ক বিভাগের মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শহরের হকার নিয়ন্ত্রণে পুরসভার একটা নীতি আছে। সেই নীতি প্রয়োগ নিয়ে আলোচনাও চলছে। বেহালাতেও সেই নীতি প্রযোজ্য হবে।’ ভেন্ডার কমিটির সদস্য এবং তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক নেতা শক্তি মণ্ডলের অবশ্য আশ্বাস, ‘এই সমস্যা নিয়ে আমাদের সঙ্গে মেট্রো কর্তাদের কথা হয়েছে। অবশ্যই মেট্রো চালুর আগে একটা ব্যবস্থা করা হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *