অয়ন ঘোষাল, বিক্রম দাস: রামপুরহাট অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস লকআপে সিবিআই (CBI) হেফাজতে থাকা বগটুই গণহত্যার মূল সাক্ষী লালন শেখের (Lalon Seikh) অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠে। এরপর সরেজমিনে গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার কলকাতায় পৌঁছন সিবিআইয়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড অজয় ভাটনাগর। সিজিও কমপ্লেক্সে কলকাতার সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর নিউটাউন বি এস এফ ক্যাম্পের গেস্ট হাউজে রাত্রিবাস করেন। সূত্রের খবর, বুধবারই বগটুইয়ে যেতে পারেন সিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিরেক্টর। আজই ক্যাম্প অফিসে বৈঠকের পরিকল্পনা। কলকাতায় গভীর রাত পর্যন্ত সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা হয় অজয় ভাটনগরের। ইতিমধ্যেই রাজ্যের তরফে সিআইডিকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন, Bogtui Massacre | Lalon Seikh: তালা ভেঙে বাড়িতে স্ত্রী-মেয়ে! লালন শেখের মৃত্যুর তদন্তভার নিল CID
সেই তদন্তে সিবিআইয়ের কি ভুমিকা থাকবে সে বিষয়ে গ্রাউন্ড জিরো থেকে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভটনাগরকে। এদিন CBI-এর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন লালন শেখের স্ত্রী। লালন পত্নীর দাবি, টাকা দিতে না পারায় খুন করা হয়েছে লালনকে। আজ রামপুরহাট হাসপাতাল থেকে দেহ নিতে পারে পরিবার। সম্ভবত আজই শেষকৃত্য। অন্যদিকে, লালন শেখের মৃত্যুর FIR-এ গরু পাচার মামলায় সিবিআই তদন্তকারী অফিসারের নাম রয়েছে। নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার SP-DIG-র। আজই কেস ডায়েরি নিতে পারে সিআইডি। রামপুরহাট থানার এফআইআর-এ খুন, তোলাবাজি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে সাতজন সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে।
রামপুরহাটে সিবিআইয়ের ক্যাম্প অফিসের সামনের কারা বিক্ষোভ দেখালো? সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল কিনা? তা নিয়েও খোঁজ খবর নেবেন ভটনাগর। এলাকার সর্বশেষ পরিস্থিতি কি? জানা গিয়েছে, সিবিআই ক্যাম্পের কর্মী ও আধিকারিকরা সেখানে নিরাপদ কিনা, তাও খতিয়ে দেখার কথা রয়েছে অজয় ভটনাগরের। গত ২১ মার্চ বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে খুন হন প্রাক্তন তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ। এরপর রাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান ৭ জন। নেপথ্যে কারা? মূল অভিযুক্ত ছিলেন লালন শেখ। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।
ঝাড়খণ্ডের একটি গ্রামে ধরা পড়ার পর, রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্য়াম্পে রাখা হয়েছিল লালনকে। সোমবার সিবিআইয়ে অস্থায়ী ক্য়াম্পের শৌচাগারে পাওয়া যায় বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের ঝুলন্ত দেহ, তাও আবার বিবস্ত্র অবস্থায়! পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, ‘সিবিআই আধিকারিকরা নাকি তাঁদের বলেছিলেন, শেষ দেখা দেখে নিন, আর দেখতে পাবেন না! লালনের শারীরিক অবস্থাও ভালো ছিল না। তাঁকে জল ও খাবারও ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছিল না’।