২০১৪-র টেটে ছ’টি ভুল প্রশ্নের মামলা নিয়ে আট বছর পরও প্রশ্নের মুখে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার তাই ত্রুটি সংশোধনের পথে হাঁটছে তারা।
আসন্ন টেটে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের আদলে ফল প্রকাশে উদ্যোগী পর্ষদ। টেটের চূড়ান্ত ফল বেরোনোর আগে ১৫০টি প্রশ্নের ‘মডেল অ্যানসার কি’ ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে। উত্তর নিয়ে কোনও সংশয় থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যুক্তি-সহ তা চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। মডেল উত্তরের সঙ্গে চাকরি প্রার্থীদের উত্তর না মিললে, পর্ষদ তা বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠাবে। বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রস্তাবিত মডেল উত্তর যাচাই করবেন এই বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞরা। এঁদের মতামতের ভিত্তিতে সংশোধিত ও সংযোজিত উত্তর আপলোড করা হবে। পর্ষদের প্রস্তাবিত বা প্রার্থীর দেওয়া – যে উত্তরটি সঠিক হবে, তাতে চূড়ান্ত শিলমোহর দেবেন বিশেষজ্ঞরা। সেটিকে আর চ্যালেঞ্জ জানানো যাবে না। এর ভিত্তিতেই মূল্যায়ন হবে টেট পরীক্ষার্থীদের। তারপর প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ফল। জয়েন্ট বোর্ড অবশ্য সব পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট স্ক্যান করে ওয়েবসাইটে আপলোড করে। এখনও পর্যন্ত সে পথে হাঁটার ইঙ্গিত দেয়নি পর্ষদ।
পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল শুক্রবার দাবি করেন, “১১ ডিসেম্বর টেট পরীক্ষার দিনই প্রশ্নপত্রের বুকলেট এবং ওএমআর শিটের নন-কার্বন ডুপ্লিকেট কপি পরীক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। যা তাঁরা বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন।” সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের আইন বিভাগের অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষা।
ভুল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে বছরের পর বছর আদালতে মামলার জেরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। সে কারণেই মডেল আনসার আপলোড করার এই উদ্যোগ। এর ফলে নিয়োগের আগেই প্রশ্নোত্তর নিয়ে যাবতীয় সংশয়ের নিরসন হবে। পাশাপাশি টেটের ওএমআর শিট পরীক্ষার্থীদের হাতে থাকলে তাঁরা নিজেদের দেওয়া উত্তর এবং প্রাপ্ত নম্বর মিলিয়ে দেখতে পারবেন। পরীক্ষার পর খাতা দেখতে চেয়ে যে বিপুল সংখ্যক আরটিআই হয়, তার সংখ্যাও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমনিতেই নিয়োগ দুর্নীতিতে নানা অভিযোগে জর্জরিত পর্ষদ। অসফল পরীক্ষার্থীদের নম্বর বাড়িয়ে নিয়োগের অভিযোগও উঠেছে। নির্ধারিত সময়ের আগে ওএমআর শিট নষ্টের অভিযোগেও বিদ্ধ পর্ষদ। এই পরিস্থিতিতে পর্ষদ সভাপতির দাবি, আসন্ন টেটে ওএমআর শিট নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও সুযোগ থাকবে না। এই পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই ৬ লক্ষ ৯০ হাজার প্রার্থী আবেদন জানিয়েছেন। ২০১৭-র টেটের তুলনায় যা ৪ গুণ বেশি।
তবে এর পরেও প্রশ্ন থাকছে। যেমন, টেট পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট কতদিন সংরক্ষিত রাখবে পর্ষদ? এর উত্তর দেননি সভাপতি। ২০১৪ ও ২০১৭-র টেটের ওএমআর শিট সংরক্ষণ নিয়ে পর্ষদের কোনও অ্যাড-হক বিধি ছিল কি না, সে প্রশ্নের উত্তরও মেলেনি।