Sampadakiyo

বরাতজোর

ভোট বড় জ্বালাতন করে৷ ভোটের স্বার্থে, চাটুকার সাজতে হয়৷ পা ধোয়া জল খেতে হয়৷ কিছু সুবিধা নিলে, কিছু দিতেও হয়৷ বিনিময় প্রথা৷ ট্রাডিশন সমানে চলে আসছে৷ দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে, এই ভারতের, মহামানবের সাগরতীরে—রবীন্দ্রনাথ ভাগ্যবিধাতা ছিলেন বোধহয়৷ নইলে এতো মিল, আসে কোথা থেকে?

রাজনীতি বলতে যা বোঝায়, তা আমরা ভুলে মেরে দিয়েছি৷ এখন শুধুমাত্র দাও-নাও এর খেলা৷ টাগ অব্‌ ওয়ার৷ দড়ি টানাটানি৷ এ ও টানছে, ও ও টানছে৷ ভোটের সময় বিমান, হেলিকপ্ঢার, মোটা চাঁদা, মোচ্ছবের খরচা নিলে, ভোটে জিতলে ধনাঢ্য দাতাকে আরও ধনাঢ্য করা তো একশোবার উচিত৷ নইলে লোকে অকৃতজ্ঞ বলবে৷ চিটিংবাজ বলবে৷ বলবে, কি অসভ্য! নেওয়ার সময় নিল, দেবার সময় আর নাম গন্ধ করছে না৷

তাই রাজনীতির খেলা যাঁরা খেলেন, তাঁরা আটঘাট বেধেই খেলেন৷ ২০১৪ সালে ৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক ছিলেন, ভোটের সময় এন্তার খরচ করে এখন ১৪০ বিলিয়ন ডলারের মালিক হয়েছেন আদানি৷ মোদীজী নিরাশ করবেন না জানতেন৷ তাই ভোটের সময় ধ্যানাধ্যান্‌ যা দরকার তাই জুগিয়ে দিয়েছিলেন৷

আদানিরা ভোটের আগে বিশ্বের ৬০৯ তম ধনী ছিলেন৷ মোদীজীর কৃতজ্ঞতার ছোঁয়ায় বিশ্বের ধনীদের মধ্যে বর্তমানে ২ নম্বরী হয়ে উঠেছেন৷ মোদীজীর তুলনা হয় না৷ সব মিউচ্যুয়াল ফান্ডের রেকর্ড ফেল করে গেছে৷ নাথিং বাট গ্র্যাটিচ্যুড৷ রাহুল গান্ধী, এভাবে বোমা ফাটাবেন, স্বপ্ণেও দাতা বা গ্রহীতা বুঝতে পারেনি৷

রাহুল গান্ধী লোকসভায় বলবেন, চোঙা ফুঁকে দেবেন, কে ভেবেছিল? রাহুল গান্ধী, মোদীজীকে জাদুকর বলে সম্বোধন করলেন৷ একদিন, দুদিন নয়—আদানিকে মোদীজী বাইশ বছর ধরে লালন-পালন করছেন৷ টাকার পর টাকা দিয়েছেন, বরাত হিসাবে৷ আদানি একুট একুট করে বড় থেকে বৃহৎ, বৃহৎ থেকে অতিবৃহৎ রাঙা মূলোর মতো ফুলেছেন৷ এ যেন গ্যাসবেলুনে কান্ড৷ গ্যাসের শেষ নেই, আরও ফুলবে, আরও ফুলবে—রাহুল গান্ধীরা আরও চেল্লাবেন, চোঙা ফাটিয়ে ফেলবেন! লাভ নেই ব্রাদার৷ যে যাবে লঙ্কায়, সেই হবে রাবন!— এ চলতেই থাকবে৷ রাজনীতির এ এক অঙ্গ৷

শুধু দেশে নয়, বিদেশের বরাত ও যেন পাওয়া যায়৷ সে বিষয়েও নজর রাখেন প্রধানমন্ত্রীকূল৷ বোফর্স কে আপনারা কি মনে রেখেছেন? হয়ত রেখেছেন৷ এখন আবার শ্রীলঙ্কার ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের বরাত! মোদীজী নাকি আদানিদের হয়ে অনুরোধ করেছিলেন৷

মোদ্দা কথা, রাজনীতির কারবারীরা যতটা এ ওর গায়ে কাদা ছিটাতে পারেন, ছিটান!—দেশের জনগন রাজনীতির কারবারীদের আর কখনোই ভালো নজরে দেখবেন না৷ কেউই ভালো নয়—সব ধাপ্পাবাজ! সব ধান্ধাবাজ!— জনগণের এতে— কিস্যু এসে যায় না৷