সোমবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হন কল্যাণময়-শান্তিপ্রসাদদের আইনজীবীরা। এ দিন আলাদা করে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। তিনি বিচারককে বলেন, ‘জেল কর্তৃপক্ষ অযথা শান্তিপ্রসাদবাবুর পরিজনদের হয়রান করছেন। ওঁর সঙ্গে জেলে আত্মীয়রা দেখা করতে গেলে তিন-চার ঘণ্টা করে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তারপর অল্প কিছুক্ষণই দেখা করা সম্ভব হচ্ছে।’ সঞ্জয়ের আবেদন, রোজ নয়, অন্তত সপ্তাহে একদিন করে যেন ঠিক ভাবে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। সঞ্জয়ের দাবি, ‘আমি জেল সুপারকে আইনজীবী হিসেবে একটা চিঠিও লিখেছিলাম। কিন্তু তিনি কোনও সাড়া দেননি বলে আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’
এরপরে একই আবেদন করতে দেখা যায় কল্যাণময়ের আইনজীবীকেও। তিনিও দাবি করেন, ‘ওঁর ৭০ বছর বয়স। দিনে ১৩-১৪টা করে ওষুধ খান। ওঁকে যেন জেলে একটু সঠিক ভাবে খাবার দেওয়া হয়।’ এই সময়ে বিচারক জানতে চান, ‘কোথায় সমস্যা হচ্ছে? জেলে কি খেতে দিচ্ছে না?’ উত্তরে আইনজীবী বলেন, ‘খাবারের পরিমাণ ও স্বাদ দুটোই খুব খারাপ। ওঁরা যা ওষুধপত্র খান তাতে পর্যাপ্ত প্রোটিন দরকার। সেটাও যথাযথ ভাবে দেওয়া হচ্ছে না।’ এই বক্তব্যকে সমর্থন করে সুবীরেশ, অশোক সাহাদের আইনজীবীরাও দাবি করেন, এটা সকলের জন্য প্রযোজ্য। বিচারককে তাঁরা বলতে থাকেন, ‘আপনি সাধারণ ভাবে একটা অর্ডার করে দিন।’
এ কথা শুনে বিচারক নিজের প্যাডে কয়েকটি পয়েন্ট লিখে নেন। প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, সকল সাধারণ বন্দিরা যে ভাবে থাকেন, যে নিয়ম তাঁদের জন্য প্রযোজ্য, সেটাই এই হাইপ্রোফাইল মামলায় বন্দিদের জন্যও এক। সপ্তাহে একদিন করে মাছ, মাংস, ডিম এবং সয়াবিন থাকেই। দু’বেলা করে প্রোটিনের জন্য ডাল থাকে। এর বাইরেও মেডিক্যাল অফিসারের সুপারিশ মতো যদি অতিরিক্ত প্রোটিন বা খাবারের দরকার পড়ে, তা হলে সেইমতো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, খেতে সমস্যা হচ্ছে বলে কোনও অভিযোগ তাঁদের কাছে করা হয়নি। প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কি এমন কোনও সমস্যা হচ্ছে? তাঁর আইনজীবী সেলিম রহমান জানান, খেতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেননি তাঁর মক্কেল।