দলীয় সূত্রে খবর, ভাঙড়ে প্রতিটি ব্লক অনুযায়ী তৃণমূলের সভাপতিদের নাম ঘোষণা হওয়ার কথা। অভিযোগ, সেই ঘোষণার আগে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করে দিল ভাঙড়ের শাসকদল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। একটি পুরোনো অডিয়ো রেকর্ডকে হাতিয়ার করে তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদের বিরুদ্ধে আসরে নেমে পড়েছেন তৃণমূলেরই অন্য এক গোষ্ঠীর লোকজন। সবমিলিয়ে নতুন করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ ভাঙড়ে।
প্রসঙ্গত, গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের সময় বোমাবাজির ঘটনায় আদালতের নির্দেশে বাড়িছাড়া কাইজার ছিলেন। সম্প্রতি একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে৷ তাতে শোনা গিয়েছে, এক ব্যক্তি ফোনে কথা বলছেন৷ সেই ব্যক্তি কাইজার বলে দাবি এবং অন্য ব্যক্তিটি ISF নেতা সরিফুল মোল্লা বলেও দাবি৷ সেখানে সরিফুল কাইজারকে ISF এ যোগ দিতে বলেন এবং লোকসভা নির্বাচনে টিকিট দেওয়ার কথা বলেন৷ কাইজার এক কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি ছিলেন বিধানসভার টিকিটের জন্য। এই অডিয়ো হাতে আসতেই কাইজারের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি ফজলে করিম, মোফাজ্জল গাজি সহ অনান্যরা।
প্রাণগঞ্জের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি ফজলে করিম বলেন, ‘‘তিনটি অঞ্চলে আমাদের ISF এর সঙ্গে কাজ করার জন্য কুপ্রস্তাব দেয় কাইজার আহমেদ৷ আমরা তাতে অস্বীকার করায় আমাদের অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয়৷ পঞ্চায়েতের লাখ লাখ টাকা তছরূপ করেছে৷ ভাঙরে ISF এর টিকিট নেওয়ার জন্য এক কোটি টাকা অফার করেছে৷’’ নারায়ণপুরের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি মোফাজ্জল গাজি বলেন, ‘‘আমি অঞ্চল সভাপতি ছিলাম৷ ওর দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্মে বাধা দেওয়ায় আমাকে ছেঁটে দিয়েছে কাইজার৷ ও অনেক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত৷’’
এবিষয়ে কাইজার আহদেম ফোনে বলেন, ‘‘আমি কোনও সভাপতি নির্বাচন করিনি৷ আর কোনও দুর্নীতির কারবার আমার নেই৷ আমাকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এসব হচ্ছে৷ দলে এদের কোনও ভূমিকাই নেই৷’’ অডিয়ো ক্লিপ সম্পর্কে তাঁর দাবি, ওসব পুরনো জিনিস নিয়ে তাঁর কোনও মাথাব্যথা নেই৷
ISF এর বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি কাইজার আহমেদ ISF এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে স্বীকার দাবি করেন, ওনার নামে একাধিক অভিযোগ থাকার জন্য ISF তাঁকে টিকিট দেয়নি৷ তবে অডিয়োয় কে কথা বলছেন, তা এখনও যাচাই করার সুযোগ হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি৷ এবিষয়ে CPIM নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, ক্ষমতার জন্য নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে তোলাবাজি, লুঠ করছে, তৃণমূলের এটাই কালচার৷ আরাবুল, শওকত বা কাইজার, সবই এক৷