বরং দক্ষিণ ভারতে, বিশেষ করে কেরালা, তামিলনাড়ুতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নামের সঙ্গে ‘বোস’ রাখার চল রয়েছে। সেখান থেকেই তাঁর নামে ‘বোস’ পদবী যুক্ত হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কেরালার কোট্টায়ামে তাঁর জন্ম ১৯৫১ সালে। কে এই আনন্দ বোস? নরেন্দ্র মোদীর সবার জন্য পাকা বাড়ির পরিকল্পনার মতো একাধিক জনমুখী পরিকল্পনা তাঁর ‘ম্যান অফ আইডিয়া’ আনন্দ বোসেরই হাত ধরে। ১৯৭৭ ব্যাচের এই আইএএস অফিসার কেরালার মুখ্যসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সচিব হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে মেঘালয় সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেছিল। বর্তমানে তিনি সেখানেই দায়িত্বে রয়েছেন। কর্মদক্ষতার নিরিখে পেয়েছেন ২৯টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, ইন্টারন্যাশনাল ফিউশন এনার্জি অর্গানাইজেশনের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ কনফারেন্সে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। ছিলেন অ্যাটমিক এনার্জি এডুকেশন সোসাইটির চেয়ারম্যানও। তিনি ‘শ্রী পদ্মনাভস্বামী’ মন্দিরের কোষাগার সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটির প্রধান হিসাবেও দায়িত্বভার সামলেছেন। এদিন রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আনন্দ ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, উনি আমার উপর আস্থা রেখেছেন। আমি বাংলার মানুষের কল্যাণে সংবিধান মেনে কাজ করতে চাই। যে কোনও নির্বাচিত সরকারই সবচেয়ে কার্যকর হয় সংবিধান মেনে কাজ করলে।’ তিনি বাংলায় ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য…’ আবৃত্তি করে ইংরেজি তর্জমাও শুনিয়েছেন।
ধনখড়ের জমানায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সম্পর্ক মোটেই মধুর ছিল না। রাজ্যপালের টুইট, রাজ্যের প্রশাসন ও শাসক দলের পালটা টুইটে সরগরম ছিল রাজনৈতিক মহল। তিনি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পরই রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দেন ধনখড়। মেঘালয়ের রাজ্যপাল লা গণেশনকে অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলার। তার পরে গত পাঁচ মাসে অবশ্য রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কোনও সংঘাত বাধেনি। বরং বিভিন্ন ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বই ঠারেঠোরে উষ্মা প্রকাশ করেছেন গণেশন সম্পর্কে। সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকার, রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।