উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম যোগাযোগ রক্ষাকারী হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহী সড়কের উপর অবস্থিত বিপ্লবী ননী সেতু সংস্কারের জন্য টানা আটদিন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে মুর্শিদাবাদ হাইওয়ে ডিভিশনের দু’ নম্বর সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ। ১৯ তারিখ থেকে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। এমনকি হাঁটাচলাও বন্ধ। পূর্ত দফতরের মুর্শিদাবাদ জেলার হাইওয়ে ডিভিশন ২ এবং অন্যান্য দফতরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই আলোচনা শেষে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ হাইওয়ে দু’ নম্বর সড়ক অন্তর্ভুক্তি বিভাগের আধিকারিক অতনু সেন বলেন, “বহুদিন ধরেই সেতুটির সংস্কার খুবই প্রয়োজন ছিল। সেই কারণেই সেতুর উপর দিয়ে কিছুদিন যান চলাচল বন্ধ রেখে সংস্কারের কাজ শুরু করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সকলের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। এই সেতুর চারটি স্ল্যাব ভেঙে গিয়েছে। যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে ওই স্ল্যবগুলি দ্রুত পরিবর্তন করা প্রয়োজন।”
তিনি জানান, আগামী ১৯ তারিখ থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ওই সেতুর উপর দিয়ে কোনওরকম কোন যানবাহন চলাচল করবে না। পাশাপাশি পথচারীদেরও হাঁটাচলা বন্ধ থাকবে। সেতুর অন্যান্য অংশেও জরুরি মেরামতের জন্য ডিসেম্বর মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ওই সময় ছোট গাড়ি চলবে। সব মিলিয়ে ওই সেতুটি বন্ধ রাখা হতে পারে ২৩ দিনের মতো। পরিবর্তে বিকল্প রাস্তা করা হয়েছে কুলি চৌরাস্তা মোড় থেকে কান্দি শহর বাইপাস এবং ভরতপুর সালার হয়ে পাচুন্দি মোড়। এই রুটে বর্ধমান, বীরভূম কলকাতার গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহী সড়কের মূল যোগাযোগ রক্ষাকারী সেতু ময়ূরাক্ষী নদীর উপর অবস্থিত ‘বিপ্লবী ননী সেতু’। বাম সরকারের আমলে ১৯৯২ সালে তৈরি এই সেতুর পরবর্তী সময়ে কোনও সংস্কার হয়নি। বর্তমানে এই সেতুর উপর দিয়ে প্রত্যেকদিন প্রায় দু’ হাজারের উপর বাস, লরি চলাচল করে। মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদিয়া মূলত এই তিন জেলার মানুষ খুব সহজেই হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহী রোড ধরে এই সেতু পার করে বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় যাতায়াত করতে পারে। এই সেতু আটদিন বন্ধ থাকায় সড়কপথে দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গে যেতে সমস্যায় পড়বেন যাত্রীরা৷
যদিও বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা বলেন, “বর্তমানে রাজ্য সরকার এই সেতু সংস্কারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কারণ এই সেতুর বহু অংশ ভগ্নপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। কটা দিন মানুষের সমস্যা হলেও, এরপর নিশ্চিন্তে পারাপার করা যাবে।”