পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা শহরের প্রাণকেন্দ্র এবং ডাক্তার পাড়া হিসেবে পরিচিত সিঙ্গাতলার চারমাথা মোড়ে একটি ওষুধের দোকানের পাশে ব্যক্তিগত চেম্বার খুলে প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করেছিল শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি। শুধু চিকিৎসকই ভুয়ো নয়, তার নামটাও ভুল বলে তদন্তে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দা কর্তারা। আরও জানা গিয়েছে, শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আসল নাম দেব বর্মন৷ সে নলহাটির বাসিন্দা৷ আর ডা. শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের নিউরো বিশেষজ্ঞ। ওই চিকিৎসকই প্রথমে জানতে পারেন যে, তাঁর নামে মালদায় ভুয়ো চিকিৎসাকেন্দ্র খুলে একজন যুবক প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছে। গত দু’মাস ধরে ৫০০ টাকা ভিজিটের বিনিময়ে একটি ওষুধের দোকানের পাশেই নিজস্ব চেম্বার খুলে রোগী দেখার ব্যবসা চালু করার অভিযোগ তিনিই গোয়েন্দা দফতর এবং সাইবার ক্রাইম থানায় জানান।
একদিন আগে এই অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেন জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা দফতরের কর্তারা। সোমবার দুপুরে সশরীরে হাজির হন তদন্তকারী অফিসাররা। ওই ভুয়ো চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে রোগীদের ভিড় দেখে হতবাক হয়ে যান তাঁরা। এরপরই বিভিন্ন বিষয়ে তদারকি করে গ্রেফতার করা হয় ভুয়ো ওই চিকিৎসককে। এদিকে, এতদিন ধরে চিকিৎসক হিসেবে পরিষেবা নেওয়া রোগীরা ভুয়ো বলে জানার পর রীতিমতো হতভম্ব হয়ে যান। এদিন রোগীকে দেখাতে আসা এক মহিলার দাবি, একমাস ছেলেকে ওষুধ খাইয়েছেন এই চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী৷ এই ওষুধের দোকানের পরামর্শেই এই চিকিৎসকের কাছে তিনি গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন৷
আরও এক রোগীর দাবি, গত মাসে দেখিয়েছেন এই চিকিৎসককে৷ আর আজ তাকে দেখাতে এসে জানতে পারেন যে, এই ব্যক্তি আদতে একজন ডেলিভারি বয়৷ এই ব্যক্তিও ওষুধের দোকানটির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন৷ এই ওষুধের দোকানের কর্ণধার দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘আমার এখানে মাঝেমধ্যেই অনেক নামজাদা চিকিৎসক নিজেদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য ভাড়া নেন। দু’মাস আগে এক রিপ্রেসেন্টেটিভের মাধ্যমেই এই চিকিৎসকের সন্ধান পেয়েছিলাম। তারপর থেকে উনি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছিলেন।’’তবে ওষুধের ফার্মেসি কীসের ভিত্তিতে ওই ভুয়ো চিকিৎসককে চেম্বার খোলার জন্য ঘর ভাড়া দিয়েছেন, সেটিও তদন্ত করে দেখা দেখা হচ্ছে বলে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে৷ ধৃত ব্যক্তিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালদা আদালতে আবেদন করার কথা জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে৷