বসিরহাটে গুলিবিদ্ধ কনস্টেবল প্রভাত সর্দারের বাড়ি নরেন্দ্রপুর থানা (Narendrapur) এলাকায় বয়নালা গ্রামের। ২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে যোগ দেয় প্রভাত। বৃদ্ধা মা, ছোট একটি মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার তাঁর। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ ডিউটির জন্য বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলো প্রভাত। তার পরেই এই ঘটনা। মঙ্গলবার বারাসাতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার হবে বলে পরিবার সূত্রে খবর। পরিবারের লোকেরা প্রথমে বাড়িতে কোনও খবর পাননি। সকালে বসিরহাটের গুলি চালনার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রচার পাড়ার লোকজন প্রভাতকে চিনতে পারে। তাঁরাই ছুটে এসে বাড়িতে খবর দেয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের পাড়ার ছেলেরা, বন্ধু-বান্ধবরা টিভিতে খবর দেখে প্রভাতকে চিনতে পেরে বাড়িতে খবর দেয়। তারপর বাড়ির লোকজন খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টা নিশ্চিত হয়। প্রভাতের শ্যালক হাসপাতালে আছেন। আমরা জানলাম, এখন ও একটু সুষ্ঠ আছে। অপারেশনের জন্য প্রস্তুতি চলছে।” প্রভাত যাতে তাড়াতাড়ি সুষ্ঠ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে সেটাই চাইছেন স্থানীয় বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশীরা।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সোমবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বসিরহাটের (Basirhat) শাকচুড়ার বাজারে। একটি দলই কার্যালয়ের সামনে একে অপরের সঙ্গে বচসা জড়িয়ে পড়ে দুই গোষ্ঠী। এর পর দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিও শুরু হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সোমবার রাত দশটা নাগাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বসিরহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। সেখানে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই গুলিতেই আহত হন অনন্তপুর পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল প্রভাস সর্দার। গুলি এসে লাগে ৪২ বছর বয়সি প্রভাসের বাম কাঁধে। প্রথমে তাঁকে বসিরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরে তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়৷
এই ঘটনার পরেই পরিদর্শনে যান জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের তরফে তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাতেই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ৷ গুলি চালানোর অভিযোগে স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি নজরুল হক এবং তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়৷ সবমিলিয়ে মোট ৪১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷