FIFA আয়োজিত গৃহহীনদের (Homeless World Cup) বিশ্বকাপ ফুটবলে ভারতের হয়ে তিনকাঠির দায়িত্ব সামলেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা মধ্যমগ্রামের অরিন্দম ঘোষাল। তাও অবশ্য ২০১০ সালের কথা। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর। এখন কেমন আছেন অরিন্দম?

হাইলাইটস
- 2010 সালে গৃহহীনদের বিশ্বকাপ ফুটবলে ভারতের গোলরক্ষক ছিলেন অরিন্দম
- বাংলা থেকে মধ্যমগ্রামের অরিন্দম ঘোষালই একমাত্র সুযোগ পেয়েছিলেন সেই খেলায়
- এখন সে সব অতীত, পেটের টানে অটোই একমাত্র ভরসা অরিন্দমের
২০১০ সালে ব্রাজিলে খেতলে গিয়েছিলেন অরিন্দম
অরিন্দমই ছিলেন প্রথম গোলকিপার। এছাড়াও আরও দুই গোলকিপার ছিলেন দেশের অন্য রাজ্য থেকে। সালটা ২০১০। খেলা হয়েছিল ফুটবলের স্বপ্নের দেশ সূদুর ব্রাজিলে। পেলের দেশে, নানান দেশের খেলোয়ারদের পায়ে দ্রুত গতিতে ছুটে আসা বল সামলেছিলেন অরিন্দম। তারপর কেটে গেছে ১২টি বছর। আজ অবশ্য সবটাই অতীত। সেই সময় যে মানুষটা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অভিভাবকের মত, আজও সেই মানুষটার জন্যই অরিন্দমের রুজিরোজগার। যাঁকে অরিন্দমের কথায় দেবতা বললেও কম হবে না। তিনি আর কেউ নন মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ।
অরিন্দমের অন্ধকার অধ্যায়
অরিন্দম কোনও চাকরি পাননি। তাই রথীন ঘোষের সহযোগিতায় মধ্যমগ্রামে একটি রূটে অটো চালাতে শুরু করেন তিনি। যা বর্তমানে তাঁর অন্যতম রোজগার, তার সঙ্গে ফুটবল চালিয়ে যাচ্ছেন। যা ফুটবলের ভাষায় বলে খেপ। খেপ খেলেন আজও। ইস্টবেঙ্গল জুনিয়ার, এফসিআই, রাজস্থানের মতো দলে খেলেছেন একসময় অরিন্দম। তবে এরই মধ্যে অরিন্দমের জীবনে নেমে আসে কালো দিন। খেলতে গিয়ে গুরুতর চোট পান পা-তে। ডান পায়ের মালায়চাকি তিন টুকরো হয়ে যায়। তারপর সেই পা অপারেশন হয়। সেই ধাক্কা কাটিয়ে তিনি মাঠে ফেরেন। তবে মাঠে ফিরলেও আগের মতো মনোবল আর নেই তাঁর। মানসিক শক্তি হারিয়েছেন অনেকটাই। এদিকে অর্থের অভাবে পায়ের ভিতরে থাকা প্লেট এখনও অপারেশন করে বের করতে পারেননি।
স্বপ্ন দেখতে ভুলেছেন অরিন্দম
তিনি বাবাকে হারিয়েছেন গত কয়েক বছর আগেই। ভাড়া বাড়িতে মাকে নিয়েই থাকেন অরিন্দম। বিশ্বকাপ ফুটবল হচ্ছে কাতারে। বিশ্বকাপে ব্রাজিলের খেলা দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেটা তো এখন স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন তাঁর আর কখনও পূরণ হবে কিনা তারও কোনও ঠিক নেই। মনোবল ভেঙে গেলেও এখন অরিন্দম ফুটবল খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন শুধুমাত্র অর্থের প্রয়োজনে। আর কোনও দলে খেলার স্বপ্ন দেখেন না তিনি। সারাদিনের মধ্যে প্রাকটিসের সময় বের করে প্রতিদিন চলে যান মাঠে। কখনও সকালে বা কখনও বিকেলে। খেলা কোনওদিনই ছাড়তে পারবেন না তিনি।
এই মাঠই তাঁর প্রেম। তবে একটা চাকরি পেলে হয়তো জীবনে এত লড়াই কিছুটা সাফল্য পেত। যদিও এই বিষয়ে তাঁর জানা কোনও ব্যক্তি নেই যাঁর কাছে তিনি আবেদন করতে পারবেন। ছোটবেলা থেকে অর্থকষ্ট দেখেছেন পরিবারে। সেইখান থেকে উঠে এসে FIFA আয়োজিত গৃহহীনদের ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। অরিন্দমের কাছে এটাই অনেক বড় পাওয়া।
আশপাশের শহরের খবর
Eisamay News App: আশপাশের তাজা ও গুরুত্বপূর্ণ খবর বাংলায় পড়তে ডাউনলোড করুন এই সময় অ্যাপ