বছর দুয়েক আগে ঝাড়গ্রামের গুপ্তমণি, চিল্কিগড়ের কনক দুর্গা, নয়াগ্রামের রামেশ্বর মন্দির সংস্কারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কনকদুর্গা মন্দির চত্বর সংস্কারের জন্য দু কোটি টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলপথে ঢোকার মুখে তৈরি হয়েছে বিশাল আকৃতির গেট। মন্দির প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা করে তৈরি করা হয়েছে বসার জায়গা। মন্দিরের চারপাশ বাঁধিয়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মন্দির চত্বরে তৈরি করা হয় শিশুদের পার্ক। মন্দিরের পাশেই বিশাল জায়গা জুড়ে গাড়ি পার্কিং, বাথরুমের ব্যবস্থা করা হয়। মন্দির চত্বর পুনর্নির্মাণের পর এবার পুরনো মন্দিরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে খুব শীঘ্রই। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মন্দির সংস্কার করতে খরচ হবে প্রায় ৮০ লাখ টাকা। বিশেষজ্ঞদের দেখিয়ে উন্নতমানের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংস্কার করা হবে এই মন্দির। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ঝাড়গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ডুলুং নদী (Dulung River)। নদীর তীরে গভীর জঙ্গলের মধ্যে কনক দুর্গা মন্দির। দেবী এখানে অশ্বারোহিনী চতুর্ভূজা। অষ্টধাতুর এই মূর্তি ঘিরেই জমে ওঠে দুর্গাপুজো। কথিত আছে, ১৭৪৯ সালে চিলকিগড়ের সামন্ত রাজা গোপীনাথ সিংহ তৈরি করেন এই মন্দির। তিনি দুর্গামূর্তি পুজোর জন্য স্বপ্নাদেশ পান। এরপরেই তাঁর স্ত্রীর হাতের কাঁকন দিয়ে মূর্তি তৈরি করান তিনি। সেই থেকে শুরু হয় কনকদুর্গা পুজো। মন্দিরের প্রথম পূজারি ছিলেন রামচন্দ্র ষড়ঙ্গি। তাঁর উত্তরসূরিরা বংশানুক্রমে মন্দিরের পুজো করে আসছেন।
২০০৭-২০০৮ সালে দু’বার চুরি যায় মূর্তি। এরপর নতুন করে তৈরি হয় অষ্টধাতুর মূর্তি। মন্দিরে বসে সিসিটিভি। পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রেও জায়গা করে নেয় কনকদুর্গা মন্দির। মন্দির সংলগ্ন খরস্রোতা ডুলুং নদীর তীরে ৬১ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে চিল্কিগড় মন্দির সংলগ্ন ভেষজ গাছের সম্ভার। এই কনক অরণ্যে তিনশোর বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে, যা ইতিমধ্যে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক-গবেষকরা চিহ্নিত করেছেন।