কিন্তু মঙ্গলবার থেকে ‘ডিসেম্বর রহস্য’ নিয়ে গেরুয়া শিবিরের ঢোক গেলা পর্ব শুরু হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, ওই দিন বিধানসভার গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে সুকান্ত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বলেন, ‘ডিসেম্বরে কী হবে সেটা যাঁরা বলেছিলেন, তাঁরাই বলতে পারবেন। বিধায়ক ভাঙিয়ে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা বিজেপির নেই।’ বুধবার ঠিক একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ‘ডিসেম্বর রহস্য’-এ নতুন সংযোজন করতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে। তাঁর দাবি, ‘এই রাজ্যের সব থেকে বড় চোর ধরা পড়বে ডিসেম্বরে। আমার অ্যাঙ্গেল আমার মতো করে বলছি।’ এর পরই ডিসেম্বরে সরকার পড়ে যাওয়ার তত্ত্ব খারিজ করে সুকান্তর মতো ঢোক গেলেন তিনিও। শুভেন্দুর কথায়, ‘বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার গড়ব না। আমরা ভোটে জিতে সরকার গড়ব। আমার সভাপতি যা বলেছে, ঠিক বলেছেন। সরকার পরিবর্তনের কথা আমরা বলিনি, বলছিও না।’
‘ডিসেম্বর রহস্য’ নিয়ে বঙ্গ-বিজেপি নেতাদের নিত্যনতুন সংযোজনকে কটাক্ষ করে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সিবিআই, ইডি কী করবে, সেটা শুভেন্দু অধিকারী আগাম বলে দিচ্ছেন। তা হলে কি বিজেপি-ই চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে? আসলে রাজ্যের উন্নয়নে বাধা দিতেই শুভেন্দুরা এ সব কথা বলছেন।’ শুভেন্দুকে কাঠগড়ায় তুলে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘সিবিআইয়ের এফআইআরে কার নাম আছে? শুভেন্দু অধিকারীর। বিজেপি তো শুভেন্দুকেই চোর বলেছিল। গ্রেপ্তারি বাঁচাতে উনি বিজেপিতে গিয়েছেন। বিজেপি মানুষকে নিয়ে লড়তে পারছে না বলেই সিবিআই-ইডিকে লড়াচ্ছে।’
দলের নেতাদের মুখে ডিসেম্বর নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা শুনে বিভ্রান্ত বিজেপির নিচুতলারএকাংশও। জেলাস্তরের বিজেপি নেতারা ঠাওর করে উঠতে পারছেন না, ডিসেম্বর ইস্যুতে তাঁরা কতটা সুর চড়াবেন। বিজেপির এক জেলা সভাপতির কথায়, ‘ডিসেম্বর পড়তে এখনও দিন সাতেক দেরি। এই এক সপ্তাহে ডিসেম্বর রহস্যে আরও কী কী তত্ত্ব শুভেন্দু, সুকান্তরা সংযোজন করেন, সেটাই দেখার। আমার জেলার নেতা-কর্মীদের বলছি, ডিসেম্বরের আগে ডিসেম্বর নিয়ে কথা না-বলতে। আসলে রাজ্য নেতাদের নানারকম কথায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিচুতলার কর্মীরাই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’