ভগীরথপুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরিফ ও আশিক, হাসনাহেনা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। প্রত্যেকেই হাইস্কুলে যাওয়া পরিবারের প্রথম প্রজন্ম। কৈশোর না পেরোতেই এই এলাকার বেশিরভাগ পড়ুয়ার নামের পাশে জুড়ে যায় স্কুলছুট তকমা। ওরা ভিনরাজ্যে কাজ করতে যায় দলে দলে। আশিক বা আরিফের ক্ষেত্রেও সে ঘটনার ব্যতিক্রম হতো না। কিন্তু এটা মানতে নারাজ ছিলেন প্রসূন। মূলত তাঁর চেষ্টার ফলেই রঘুনাথগঞ্জের এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে ওই তিনজনের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে। ওই স্কুলেই অ্যাডমিশন টেস্ট দিয়ে তারা ভর্তি হলো বুধবার। ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মহাসিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটি পড়ুয়াকে যেভাবে যত্ন সহকারে পড়ানো হয়, ওদেরকেও ঠিক ততটাই গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই তিন পড়ুয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করতে শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্ত সহযোগিতা করতে আমরা পাশে থাকব।’
খুশি অভিভাবকরাও। হাসনাহেনা মণ্ডলের মা খন্দকার আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমার মেয়ের অভিনীত সিনেমা দেশ-বিদেশে নাম করছে, পুরস্কার পাচ্ছে, আমি খুব গর্বিত। আর প্রসূনবাবুর উদ্যোগে আমার মেয়ে এত ভালো স্কুলে পড়তে পারবে, তাতে আমি খুব খুশি। আশা করছি, আমার মেয়ে জীবনে আরও এগিয়ে যাবে।’হাসনাহেনা বলে, ‘নতুন স্কুলে ভর্তি হয়ে খুব ভালো লাগছে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয়ের সুযোগ পেলেও আমি করব।’এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তিনজনের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ায় খুশি পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ওরা তিন জনেই যে পরিবেশে জন্মেছে, সেখানে পড়াশোনার রীতি একেবারেই নেই। আমি চাই, ওরা পড়াশোনা করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াক। আর আগামিদিনে ওদের উচ্চশিক্ষার জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’