তবে কয়েক সপ্তাহ আগে ডেঙ্গি সংক্রমণ ঊর্ধ্বগামী থাকলেও এখন সেই সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমশই নিম্নমুখী। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে এক সময়ে ডেঙ্গির দৈনিক সংক্রমণ হাজার পেরিয়েছিল, এখন দৈনিক সংক্রমণ ৫০০-র কাছাকাছি রয়েছে। এ দিন বিধানসভায় মমতা বলেন, ‘এই বছর কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং শিলিগুড়িতে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি ছিল।’ ডেঙ্গি মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা-ও সবিস্তার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছেন, আবর্জনা ও জল সাফাই করছেন।
রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির পরিষদীয় দল বিধানভায় মুলতবি প্রস্তাব পেশ করে হইচই বাধিয়েছিল। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছিলেন শুভেন্দু। যদিও ডেঙ্গি নিয়ে রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে, তা নিয়ে ব্যাপারে নবান্নে এই সপ্তাহেই প্রশাসনিক রিভিউ বৈঠক করে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় রয়েছে। তাই, ডেঙ্গিতে ক’জন মারা গিয়েছেন, পোর্টালে তা দেওয়া যায় না। সেই জন্য কেন্দ্রীয় সরকার পোর্টালে সেই তথ্য দেয় না। আমরাও দিতে পারছি না।’ ঠান্ডা আর একটু পড়লে ডেঙ্গি আরও কমে যাবে বলে এ দিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও ডেঙ্গিতে মুখ্যমন্ত্রীর পেশ করা তথ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভায় প্রেস কর্নারে তিনি বলেন, ‘উনি (মুখ্যমন্ত্রী) অসত্য কথা বলেছেন। টাইম পাস করতে এসেছিলেন। রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ও নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠানের মাঝখানে কিছু সময় ছিল বলে উনি বিধানসভায় এসেছিলেন।’ যদিও শুভেন্দুর এই কটাক্ষের জবাবে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ডেঙ্গি ও সার নিয়ে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতা অবান্তর কথা বলছেন।’
ডেঙ্গি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করা চিকিৎসক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগে জানিয়েছেন, কলকাতা পুরনিগম ও অন্যান্য পুরসভার ডেঙ্গি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এই পরিস্থিতিতে তিনি হাইকোর্টের নজরদারিতে একটি মেডিক্যাল কমিশন ও মনিটরিং টিম চেয়ে মামলা করেছেন। মামলার শুনানি আগামী মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর হতে পারে।