স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহষ্পতিবার সকালে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় ডোমকল পুরসভার (Domkal Municipality) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হারুরপাড়া গ্রামে। প্রশাসনের উদ্যোগে গৃহবধূকে ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হতেই বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে চম্পট দেন গৃহকর্তা। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা তালা ভেঙেই গৃহবধূকে স্বামীর বাড়িতে জায়গা করে দেয়। গৃহবধূ মানোয়ারা বিবি বলেন, স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায়। তাতে আমার কোন আপত্তি ছিল না। শুধু ভাত, কাপড় নিয়ে স্বামীর বাড়িতে ঠাঁই পেতে চেয়েছিলাম। ডোমকল থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই গৃহবধূর অনুরোধে তদন্ত করেই তাঁকে ঘরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৩০ বছর আগে হারুরপাড়া গ্রামের নুর ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় টিকোরবারয়ার বাসিন্দা মানোয়ারা বিবির। ৩০ বছরের বিবাহিত জীবনের পরেও গৃহবধূকে বিতাড়িত হতে হয় স্বামীর বাড়ি থেকে। দুই সন্তান ছিল ওই দম্পতির। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এগারো মাস আগে পথ দুর্ঘটনায় বড় ছেলের মৃত্যু হয়। আর তার পরই মানোয়ারা বিবিকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তাঁর স্বামী নুর ইসলাম বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা মিনারুল মণ্ডল বলেন, “মানোয়ারা বিবির আর সন্তান ধারণের ক্ষমতা না থাকায় নুর ইসলাম তাঁকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। স্বামীর দ্বিতীয় বিয়েতে মানোয়ারা বিবিরও কোনও অমত ছিল না। কিন্তু জায়গা হয়নি মানোয়ারা বিবির।”
অবশেষে স্বামীর সংসারে থাকতে চেয়ে প্রশাসন, স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলর ও গ্রামবাসীর দ্বারস্থ হন তিনি। গ্রামবাসীদের প্রস্তাবে নুর ইসলাম রাজি না হওয়ায় আজ পুলিশের হস্তক্ষেপে গ্রামবাসীরাই মানোয়ারা বিবিকে তাঁর স্বামীর ঘরে ফিরিয়ে দেন। যদিও সে সময় বাড়িতে ছিলেন না নুর ইসলাম। স্ত্রীর ঘরে ফেরার তোড়জোড় শুরু হতেই তিনি বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে বেড়িয়ে যান। মানোয়ারা বিবি বলেন, গ্রামবাসী ও পুলিশের সাহায্যেই ঘরে ঢুকতে পারলাম। সকলকে ধন্যবাদ। শেষ দিন পর্যন্ত এখানেই থাকতে চাই। অন্যদিকে, গ্রামবাসীরা জানান, আমরা ওই গৃহবধূর সঙ্গে সবসময় আছি। কোনওরকম অত্যাচার হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। প্রশাসনকে জানাবো। পুরো ঘটনা নিয়ে অভিযুক্ত স্বামী নুর ইসলামের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।