সমস্ত বিতর্কের সূত্রপাত একটি ভিডিয়োতে। যেখানে দেখা যায় একটি ছেলে একটি মেয়েকে ভালোবেসে গোলাপ দিলে। উপহার স্বরূপ মেয়েটিও ছেলেটির গালে চুমু খাচ্ছে। জানা যায়, ভাইরাল হওয়া সেই দৃশ্যের ছেলে ও মেয়েটি চাকদা কলেজের (Chakdaha College) পড়ুয়া। ব্যস নেমে আসে কলেজ কোড অফ কনডাক্ট কমিটির খাঁড়া। ভিডিয়োয় থাকা ছাত্রছাত্রীর কলেজে ঢোকায় জারি হয় ব্যান। সোশাল মিডিয়ায় এই নোটিশ ভাইরাল হতেই প্রতিবাদ সরব নেটপাড়া।
নেটিজেন-দের একজন কটাক্ষ করে লিখেছেন, ”ছেলেটি ফুল দিয়েছে আর মেয়েটি চুমু খেয়েছে। এতেই কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রেমের এ দৃশ্য ভীষণই অশ্লীল ভিডিও…! কিন্তু এই যদি ছেলেটা মেয়েটাকে একটা চড় মারত, সেটা তেমন অশ্লীল হত না! কিছুদিন আগে এই কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে ছাত্ররা তোলা তুলেছে, সেটাও বিশেষ অশ্লীল ছিল না, সেটাও আমাদের সহ্য হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এমন প্রেমের দৃশ্য দেখেই ছ্যাঁকা লেগে গিয়েছে!”
চাকদা কলেজের প্রিন্সিপাল স্বাগকা দাস মোহান্ত এই সময় ডিজিটালকে জানান, ”কলেজ চত্বরে এমন কাজ করায় অভিযুক্তরা নিজেরাই দুঃখিত। ওরা ক্ষমা চাওয়ায় ব্যাপারটি মিটমাট হয়ে গিয়েছে। সোমবার থেকেই ওরা আবার ক্লাসে যোগ দিচ্ছে।” তিনি আরও জানান, ওই পড়ুয়ারা কলেজের মাঠে Truth and Dare বলে একটি বিশেষ খেলা খেলচ্ছিলেন। সেসময়ই ওই ভিডিয়োটি তোলা হয়।
![Chakda College Notice Chakda College Notice](https://static.langimg.com/thumb/msid-95808015,width-680,resizemode-3/chakda-college-notice-95808015.jpg)
মিটমাট হয়ে গেলেও সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই কলেজের কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, মারামারির মতো কাণ্ডে ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না শুধু ভালোবাসলেই দোষ। এপ্রসঙ্গে জনৈক নেটিজেন তুলনা টেনেছেন মৃত্যুপথযাত্রী ঐন্দ্রিলাকে ভালোবাসা আগলে রাখা সব্যসাচীর সঙ্গে বেশ কয়েকবছর আগে ভিড় মেট্রোয় প্রেমিকাকে আগলে রাখতে গিয়ে মার খাওয়া যুবকের কথা। তাঁর মতে, ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর প্রেম ও চিরবিচ্ছেদ নিয়ে ফেসবুক থেকে চায়ে পে চর্চায় আহা উহু করা কাকু জেঠুরাই সেদিন মারধর করতে উদ্যত হয়েছিলেন সঙ্গীর প্রতি যত্নশীল, কেয়ারিং যুবকটিকে। উল্লেখ্য, কয়েকবছর আগে কলকাতা মেট্রোয় এক প্রেমিক যুগল ভিড় মেট্রোয় আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানোয় আপত্তি তুলেছিলেন যাত্রীদের একাংশ। মেট্রোয় থাকা মধ্যবয়স্ক যাত্রীরা রীতিমতো স্টেশনে নামিয়ে মারধর করে যুবককে। ওই যুবকের যুক্তি ছিল, ভিড় মেট্রোয় প্রেমিকাকে অশালীন ছোঁয়ার থেকে আড়াল করতেই কাছে টেনে নিয়েছিলেন তিনি। যুবকের কোনও কথাতেই কর্ণপাত করতে নারাজ ছিলেন তথাকথিত সুধীজন। তাঁর সেই আচরণ তাদের কাছে ছিল অশালীন।
এইসব দেখে নেটপাড়ায় কটাক্ষ, ”এখন বুঝলাম এই দেশে প্রেম-ভালোবাসার সমর্থন তখনই পাবেন যখন আপনি মরতে বসবেন বা মরে যাবেন, তার আগে কখনই নয়!” সব মিলিয়ে ঐন্দ্রিলার মৃত্যু শোক ভুলে নেটপাড়া ফের উত্তাল ভালোবাসায় ব্যান নিয়ে। চাকদা কলেজের নোটিশ নিয়ে নেটপাড়ার একাংশ বলছে, কাতারে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া অপরাধ হলেও আমাদের দেশে নয়। ফলে চুমুকে অপরাধের নাম দিয়ে শাস্তিকে ধিক্কার জানিয়েছেন নেটিজেনদের সিংহভাগ।
পশ্চিমবঙ্গের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন। প্রতি মুহূর্তে খবরের আপডেটের জন্য চোখ রাখুন এই সময় ডিজিটালে।