বিরিয়ানি তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে নামী কোম্পানির মশলা। দই, গোলাপ জল, কেওড়া জল, মিষ্টি আতর, বাসমতী চাল এবং থাকছে ১১০ গ্রাম ওজনের চিকেনের পিস। সম্পূর্ণ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে বিরিয়ানি তৈরি হয় সকাল থেকে মধ্যমগ্রামে অফিসের কিচেনে। তারপরই সেই বিরিয়ানির হাড়ি ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে উঠে চলে যায় বারাসত হাসপাতালে বাইরে ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কে ধারে। সেখানেই পরিবেশন হয় এক টাকার বিনিময়ে।
তবে বিরিয়ানি (Biryani) কবে হবে তা কাউকেই জানানো হয় না। কারণ তাহলে মানুষের ভিড় সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে যাবে বলে মত সংগঠনের। বারাসত জেলা হাসপাতালের (Barasat District Hospital) বাইরে ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে গত সাত-আট মাস ধরে মানুষের জন্য পরিষেবা দিয়ে চলেছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শুধুমাত্র বারাসত হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের আত্মীয়দের জন্য এই ব্যবস্থা। বারাসত হাসপাতালে ভিতরে এই ক্যান্টিন চালানোর অনুমতি না পাওয়ায় রাস্তার পাশেই ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে এই ক্যান্টিন চালু হয়।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধার মিঠু চৌধুরী জানান, একসময় তিনি শিলিগুড়ি থাকতেন। খালাসির কাজ করতেন। খুব কাছ থেকে মানুষের খাবারে কষ্ট দেখেছেন। অনুভব করেছেন। সেইসময় একপ্রকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন, কোনওদিন যদি ইশ্বর সহায় হন, তাহলে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। কিছু মানুষের জন্য হলেও খাবারে কষ্ট দূর করবেন। সেইভাবে আজ থেকে তিন বছর আগে পরিচিতদের সহযোগিতায় নেমে পড়েন এক টাকার থালি নিয়ে। আগে ছিল সপ্তাহে একদিন। যা বর্তমানে অর্থাৎ গত সাত মাস ধরে সপ্তাহে ছয়দিন করে হয়। অসহায় মানুষের মুখে তুলে দেওয়া হয় কোনওদিন বিরিয়ানি কোনওদিন মাছা ভাত, ডিম ভাত আবার কোনওদিন নিরামিষ এবং খিচুড়ি।
সংস্থার আরেক কর্মকর্তা রাজীব জানান, প্রথমদিকে খুবই অসুবিধায় পড়তে হত এরকম পরিষেবা চালু রাখতে। আর্থিক সমস্যা তো ছিলই। ধীরে ধীরে অনেকের সহযোগিতায় এই পরিষেবা একদিন থেকে সপ্তাহে ছয়দিন করা হয়। আগামী দিনে সাহায্য পেলে পুরো রাজ্যেই যাতে এই পরিষেবা চালু করা যায়, সে ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা রয়েছে এই সংস্থার।