প্রসঙ্গত, গত ২৭ নভেম্বর অশোকনগরে নার্সিং ট্রেনিং কলেজের (Ashoknagar Nursing Training School) ছাত্রের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এলাকায়। জানাযায় মৃত ছাত্রের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরে। রাজ্যের একমাত্র পুরুষ নার্সিং ট্রেনিং কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের গলাকাটা সহ শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছিল। মৃত ওই ছাত্রের নাম উদ্ধব সরকার, বয়স ২৫।
দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা ওই ছাত্র অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পাশে একটি মেস বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। মোট চারজন ছাত্র মিলে একত্রে থাকতেন। তার মধ্যে দুজন ছাত্র কয়েক দিন আগেই বাড়ি চলে যাওয়ায়, মৃত ছাত্র ও তার আরেক সহপাঠী ঘটনার দিন ছিলেন মেসে। কিন্তু ওই দিনই সকালে তড়িঘড়ি রুমে তালা দিয়ে বিক্রম সরকার আচমকা বেরিয়ে যায়। এরপরই বাড়ির মালিকের সন্দেহ হওয়ায় দরজা ভেঙে খাটের তলা থেকে উদ্ধার হয় রক্তাক্ত মৃতদেহ।
এরপরই পলাতক বিক্রম সরকারের খোঁজে নামে পুলিশ। ঘটনার পরই উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক সারেন জেলা পুলিশ সুপার। তারপরই পুলিশের বিশেষ দল অভিযুক্তকে ধরতে রওনা দেয় উত্তরবঙ্গে। সেখানে থেকেই গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্তকে। জিজ্ঞাসাবাদে সহপাঠীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে বিক্রম বলেই দাবি।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিক্রমের দাবি, ঘটনার দিন বিকেলে অভিযুক্ত বিক্রম সরকারের পরিবার তুলে কটু কথা বলে উদ্ধব। তখনই রাগে-ক্ষোভে প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবে বিক্রম। এরপরই ঘরে একা থাকার সুযোগে প্রথমে হাতুড়ি ও পরবর্তীতে ছুরি ব্যবহার করে এলোপাথারি কোপ বসায় উদ্ধবের শরীরে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর দেহ রেখেই পালায় বিক্রম। জেরায় প্রকাশ, এরপরই গঙ্গারামপুরে নিজের বাড়ি সহ আত্মীয়দের বাড়িতে আত্মগোপন করার চেষ্টা করে এমনকি হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ারও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল বলেই জানা গিয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অশোকনগর থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে থানায়। বিক্রমকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেওয়া বয়ানের সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জেলা পুলিশের তরফ থেকে।
অভিযুক্ত বিক্রম সরকারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতের পরিবারসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। বিক্রম সরকারের মা স্থানীয় শাসকদলের নেত্রী বলেও জানা গিয়েছে। বাবা বকুল
সরকারের নামে পূর্বে একটি খুনের মামলা রয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রে খবর।
পশ্চিমবঙ্গের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন। প্রতি মুহূর্তে খবরের আপডেটের জন্য চোখ রাখুন এই সময় ডিজিটালে।