জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুরের সংগঠন পাড়ার বাসিন্দা পুতুল নেশা পারভিন এবং হাজেরা খাতুনকে অঙ্গনওয়াড়িতে চাকরি দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েক দফায় মালদা (Malda) জেলা তৃণমূলের জয় হিন্দ বাহিনীর জেলা সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম মোট ১৬ লাখ টাকা নেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের আগে দুই বোনের একজনকে অঙ্গনওয়াড়ির সুপারভাইজার এবং অন্যজনকে শিক্ষিকার চাকরি করে দেবেন বলে প্রলোভন দেখিয়েছিলেন জাহাঙ্গির আলম।
১৫ দিনের মধ্যে চাকরি হয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে দুই বোন নিজেদের শেষ সম্বলটুকুও ওই নেতাকে দিয়েছিলেন বলেও দাবি। কিন্তু দেড় বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও টাকা ফেরত পাননি। চাইতে গিয়ে বারবার মিলেছে হুমকি৷ শুক্রবার টাকা চাইত গেলে ওই তৃণমূল নেতা পুতুল নেশা পারভিনকে গলা টিপে ধরে পেটে লাথি মারেন বলে অভিযোগ। প্রাথমিক চিকিৎসার পর হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় (Harishchandrapur Police Station) লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন পুতুল নেশা পারভিন।
অভিযোগকারী পুতুল নেশা পারভিন বলেন, “আমরা চাকরির জন্য ১৬ লাখ টাকা দিয়েছিলাম।ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) নাম করে টাকা নিয়েছিলেন উনি। টাকা ফেরত চাইতে যাওয়ায় মারধর শুরু করেন।” আর এক অভিযোগকারী হাজেরা খাতুন বলেন, “আমরাই টাকা চাইতে গেলে আমার দিদিকেই মারল। এই ভাবে একজন মহিলার গায়ে কেন হাত তুলবে। কঠোর শাস্তি চাইছি আমরা।”
যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির আলম বলেন, “আমি কোনও টাকা নিইনি৷ আমাকে ওই মহিলা বিয়ে করার জন্য চাপ দিত৷ প্রতিহিংসাবশত ফাঁসাচ্ছে আমাকে।” সমগ্র ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছে BJP। এনিয়ে উত্তর মালদা BJP-র সহ সভাপতি তাপস গুপ্তা বলেন, “তৃণমূলের আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। যে টাকা তুলেছে, তার পেছনে আরও কে আছে সেটা দেখতে হবে।” যদিও এনিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, “দলের নাম করে অনেকেই টাকা তুলছে। আমরা ওই দুই বোনের পাশে আছি। কোনও রকম রাজনীতি না দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Elections) প্রাক্কালে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে আগেই জেলে গিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা৷ এটাকে ইতিমধ্যেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইস্যু করে মাঠে নেমেছে বিরোধীরা৷ এবার এই ঘটনায় নতুন করে অস্বস্তিতে শাসকদল।