স্থানীয় সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার (Purulia) রেল শহর আদ্রার বাসিন্দা অমর মোদক। তিনি নিজে রেলের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিলেন। পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল গেমে আসক্তি এসে গিয়েছিল ওই ব্যক্তির। এতটাই নেশায় পড়েছিলেন যে, অনলাইন গেম খেলার জন্য প্রচুর টাকা খুইয়েছেন অবলীলায়। দেনার অঙ্ক ছুঁয়েছিল প্রায় কয়েক লাখ টাকা। নিত্যদিন বাড়িতে এসে টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিতে পাওনাদাররা। রবিবার দুপুরে নিজেদের ঘর থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় তাঁর এবং তাঁর কন্যা অঙ্কিতা মোদকের দেহ। পুলিশ গিয়ে দেহ দুটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নিজের মেয়েকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি।
মৃতের স্ত্রী যমা মোদক বলেন, “আমার স্বামী কয়েক লাখ টাকা দেনা করে ফেলেছিল। দেনা শোধ করার জন্য রোজ পাওনাদাররা চাপ দিত। মাঝেমধ্যেই ও বলতো তিন জনেই মরে যাব। কিন্তু আমি তো ওঁকে অনেক বুঝিয়ে ছিলাম। আমার বাবাও অনেক সাহায্য করেছিল। তারপরেও ও কেন এমন করল ? আমাকেও মেরে ফেলতে পারতো, আমাকে কেন বাঁচিয়ে রাখলো ?” মৃত ব্যক্তির স্ত্রীয়ের কথায়, তাঁর স্বামী হয়তো খাবারে কিছু মিশিয়ে দিয়েছিলেন আগের দিন রাতে। স্ত্রী ঘুমিয়ে যাওয়ার পর অমল মোদক তাঁদের সাড়ে পাঁচ বছরের কন্যা অঙ্কিতা মোদককে গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে ধারণা।
এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ (Purulia District Police) সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগামীকাল দেহগুলির ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মর্মান্তিক এই পরিণতিতে ভেঙে পড়েছে পরিবারের বাকি সদস্যরা। গোটা ঘটনার কথা শুনে স্থানীয় বাসিন্দারাও বিস্মিত। ঘটনার পর থেকে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।