প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন জামুড়িয়ার তৃণমূল প্রার্থী প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। জামুড়িয়ার বারুল গ্রামে চলছিল প্রচার। সেই সময় CPIM র সমর্থক বলে পরিচিত দিনু বাউরি ও তার দলবল মিলে প্রচারে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়৷ তখনই দিনু বাউরি ও দলবল প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে৷ স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতা রবিন কাজি তাঁকে বাঁচাতে যান৷ সেসময় লালচাঁদ বাউরি নামে এক ব্যক্তি ওঁর মাথায় আঘাত করে৷ রবিন কাজি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন৷ এরপর নিজের চারচাকা গাড়ি নিয়ে রবিন কাজিকে পিষে দিয়ে চলে যান দীনু বাউরি।
ঘটনার পর তড়িঘড়ি স্থানীয়রা এসে রবিন কাজিকে হাসপাতালে নিয়ে যান৷ যদিও শেষরক্ষা হয়নি, চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন তাঁকে৷ ঘটনার পর দিনু বাউরি গা ঢাকা দেন। রবিন কাজির মৃতদেহ নিয়ে জামুড়িয়ায় মিছিল করেন তৃণমল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গোটা আসানসোল (Asansol) জুড়ে তীব্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকদিন পরেই গ্রেফতার হয় দিনু বাউরি। ১১ বছর ধরে মামলা চলার পর বুধবার দিনু বাউরিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক৷ সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছ’মাসের জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন বিচারক৷
এদিন সরকারপক্ষের আইনজীবী বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনায় মোট ১৭ জন সাক্ষী দিয়েছেন। অনেক প্রলোভন থাকা সত্ত্বেও তাঁরা সাক্ষী দিয়েছেন৷ বিরোধী দল থেকে এটাকে দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল৷ তবে অবশেষে সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি৷ তিনি আরও জানান, ঘটনায় ২৪ জন অভিযুক্ত ছিল৷ এর মধ্যে দু’জন মারা গিয়েছে এবং ২১ জন ছাড়া পেয়েছে৷ সাক্ষ্যদের বয়ান শুনে বিচারক শেষ পর্যন্ত দিনু বাউরিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনান। এই রায় শোনার পর ভেঙে পড়েন দিনু বাউরি৷