আবাস যোজনার সমীক্ষা করতে গিয়ে একের পর এক জেলায় সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। কিছুক্ষেত্রে সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রাণ সংশয়েরও। সেই একই চিত্র ফুটে উঠল বাঁকুড়ায় (Bankura)। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (PM Awas Yojana) স্বজনপোষণের অভিযোগ অব্যাহত বাঁকুড়ার (Bankura) গ্রামে। প্রকৃত উপভোক্তাদের বাদ দিয়েই ওই প্রকল্পের তালিকা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ একাধিক গ্রামবাসীর। দায়িত্বপ্রাপ্ত আশা কর্মীদের কাজে বাধা দিলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। বুধবার গঙ্গাজলঘাটির লটিয়াবনী গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুমুরিয়া গ্রামের গিয়ে সমীক্ষার কাজের জন্য বাধাপ্রাপ্ত হন আশা কর্মীরা বলে অভিযোগ।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূল (TMC) পরিচালিত লটিয়াবনী গ্রাম পঞ্চায়েতের (Latiabani Gram Panchayat) তরফে ৫৩ জনের নাম নথিভূক্ত হয়েছে। কিন্তু ওই তালিকায় প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম নেই। এই ঘটনায় গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় বিরোধী নেতৃত্ব। স্থানীয় BJP নেতা প্রদীপ গরাই বলেন, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Elections) এই বুথে BJP প্রার্থী জয়লাভ করেন। সেই সময় বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করে ১০৯ জনের নামের তালিকা তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে BJP ও CPIM সমর্থকদের নাম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র নিজেদের সমর্থক এমন ৫৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে শাসক দল তৃণমূল। প্রকৃত উপভোক্তা ১০৯ জনকেই সরকারি প্রকল্পে বাড়ি দিতে হবে বলে তিনি দাবি করেন।
তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেই বেজায় অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত আশা কর্মীদের। আশা কর্মী মমতা দাস বলেন, “গ্রামবাসীদের বাধায় আপাতত সমীক্ষার কাজ বন্ধ রেখেছি। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা রয়েছে একাধিক কর্মরতা আশা কর্মী বলে জানান তিনি। স্থানীয় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পূর্ণিমা লোহার বলেন, “আমরা ঘর পাইনি, তাই আমরা বাধা দিয়েছি। আমরা অনেকদিন ধরে ঘর চাইছি। আমাদের একটা ঘর করে দিলে ভালো হয়। আমাদের কাছ থেকে এসে ভোট নিয়ে যাবে, অথচ আমরা ঘর পাবো না, এটা তো হতে পারে না।”
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা প্রকল্পে ৮২০০ কোটি টাকা রাজ্যকে বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government)। প্রাপ্ত অর্থে প্রায় ১১ লাখ নতুন ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। আবাস যোজনার বকেয়া বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দড়ি টানাটানি হয়েছে বিস্তর। সরকারি প্রকল্পগুলিতে যাতে কোনওভাবে কারচুপি না হয়, সে ব্যাপারে কিছু শর্ত বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, ঘর বন্টনে ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ে পর্যবেক্ষক দল গঠন করেছে নবান্ন (Nabanna)। IAS পদাধিকারী সহ একাধিক আমলাকে রাখা হয়েছে সেই টিমে। বিভিন্ন জেলায় আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের হেনস্থার বিষয়টি নিয়েও গ্রামোন্নয়ন দফতর শীঘ্রই বৈঠকে বসতে পারে বলেও জানা গিয়েছে।